বন্ধ সোয়া লাখ বর্গমিটার ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কাজ
নগরীতে টানা বৃষ্টি, জোয়ার ও জলাবদ্ধতায় গতমাসে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সোয়া এক লাখ বর্গমিটার সড়কের মেরামত কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, গত এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কের মেরামত কাজ বন্ধ রয়েছে জানায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কে সৃষ্ট হওয়া ছোট বড় গর্তে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার সড়কের বিটুমিন ও পাথর উঠে সৃষ্টি হওয়া এসব গর্তে যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনাও। টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার পর নগরীর সড়কগুলোর ক্ষত ঘা-এ পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চসিক সূত্র জানায়, জুলাই মাসের প্রথম দিকে টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় অসংখ্য সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টানা বৃষ্টি, জোয়ার ও জলাবদ্ধতার পানি জমে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় গর্ত। সে সময় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের জন্য একটি তালিকাও প্রস্তুত করে চসিক। তালিকা মতে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় এক লাখ ২১ হাজার ৮১৪ বর্গমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কের মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কাজ করতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সাধারণ ছুটি, কারফিউ ও বৃষ্টির কারণে কাজ আটকে যায়। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ফলে এসব কাজ আর খুব একটা এগোয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন সড়কে সৃষ্ট গর্তে ইটের টুকরো দিচ্ছে চসিক। নগরীর মুরাদপুর অংশের আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের শেষে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে গতকাল ইটের টুকরো বিছাতে দেখা যায়। চসিকের একটি টিম গর্তগুলোতে ইট দিয়ে সমান করার চেষ্টা করেন তারা। এছাড়া, কদমতলী ও ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের ময়দারমিলসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে ইট বা ইটের টুকরো বিছিয়ে গর্ত সমানের চেষ্টা করে চসিক।
নগরীর ১৯ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের ময়দার মিল এলাকার সেলুন দোকানদার ছোটন দাশ বলেন, গত মাসে ময়দার মিল মোড়ে প্রায় ১০০ মিটার সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়। ছোট বড় এসব গর্তে যানবাহনের ধীরগতির কারণে একদিকে যেমন যানজট সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনাও। প্রতিদিন কোন না কোন গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত এসব সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করছি।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বৃষ্টিতে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের একটি তালিকা তৈরি করে মেরামতের কাজ করবো এমন সময়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে সাধারণ ছুটি, কারফিউর জন্য মেরামত কাজ শেষ করতে পারিনি। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ মেরামত কাজ শেষ করতে পেরেছি। এছাড়া, সম্প্রতি ফের টানা বৃষ্টির কারণে আরো কিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টির মধ্যে তো বিটুমিন ব্যবহার বা কার্পেটিং করা যায় না। তাই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোতে ইতোমধ্যে ইট দিয়ে মেরামত শুরু করেছি। বৃষ্টি থামলে আমরা ভালোভাবে সংস্কার করবো। এছাড়া, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন সড়ক আমরা টেন্ডারের মাধ্যমে মেরামত করবো।