বাণিজ্যিক নগরে এমন সড়ক!
নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার সড়ক ধরে পাঁচশ মিটার সামনে এগোলেই খতিবের হাট। সিটি কর্পোরেশনের ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের আওতাধীন এই এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের পথ চাঁনমিয়া সড়ক। তবে অবাক করার বিষয় সিটি মেয়রের বাসভবন থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বের এই সড়কটি কাদামাটিতে ভরা। শহরের ভেতর কাদামাটির সড়ক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। গত একযুগেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এই সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এই সড়কে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই সড়ক সংস্কার করা হবে বলে জানান চসিক কাউন্সিলর।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার থেকে খতিবের হাট, হাজি চাঁনমিয়া সড়ক হয়ে ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ এন্ড হসপিটাল পর্যন্ত যান এই প্রতিবেদক। প্রায় দুই কিলোমিটার এই সড়ক পুরোটা কাদামাটি এবং টিলা-টংকরে ভরা। এই সড়ক ধরে প্রতিদিন চলাচল করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার (ষোলশহর সুন্নিয়া মাদ্রাসা) শত শত শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবী ও স্থানীয়রা। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হসপিটাল এবং নার্সিং কলেজে যাতায়াত করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন রোগী, শিক্ষার্থী ও স্বজনরা। স্থানীয়দের অভিযোগ গত দুই বছর ধরে জলাবদ্ধতার কাজ চলমান থাকলেও বিগত ১২ বছর ধরে এই সড়কের বেহাল দশা। গুরুত্ব দিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করা হয়নি। কাদামাটির এই সড়কের প্রতিদিনই কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটে। প্রায় সময় রিকশা উল্টো পড়ে যান যাত্রীরা। ভাড়াটিয়ারা বাসা ছেড়ে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় বাড়ির মালিকরা।
খতিবের হাটের সিদ্দিক মার্কেটের মালিক মো. পারভেজ বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে কাউন্সিলরকে সড়ক মেরামতের ব্যাপারে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন সুরহা হয়নি। গত এক যুগ ধরে আমরা সমস্যার মধ্যে দিয়ে বসবাস করছি। বর্তমানে কষ্ট হলেও চলাচল করা যাচ্ছে। কিন্তু বর্ষাকালে কিভাবে চলাচল করবো? তখন চলাফেরার অবস্থা থাকেনা।
খতিবের হাট থেকে ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ এন্ড হসপিটাল পর্যন্ত সড়কের একাংশের কাউন্সিলর এসরারুল হক বলেন, আমার ওয়ার্ডে সড়কের কিছু অংশে পড়লেও সড়কটি সংস্কারের দায়িত্ব পেয়েছেন ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আমি যতটুকু জানি সড়কটি টেন্ডারও হয়েছে।
৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, গত বছর এই সড়ক নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। আমরা কিছু কাজও করেছি কিন্তু সেখানে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ শুরু করায় সড়কের কাজ শেষ করা যায়নি। চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমের আগেই রিটেইনিং ওয়ালের কাজ শেষ করে সড়কের কাজ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বলেন, আমরা জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ৩১ মার্চের মধ্যেই ওই এলাকার রিটেইনিং ওয়ালের কাজ শেষ করতে বলেছি। আমি রবিবার (আজ) রিটেইনিং ওয়ালের কাজ পরিদর্শনে যাবো। যত দ্রুত কাজ শেষ করা যায়, আমরা সেভাবে আগাচ্ছি।