আন্তর্জাতিক

বাদ পড়তে পারেন বাইডেন, বিকল্প আছেন যারা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে উত্তেজনা ততই বাড়ছে। বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে হেরেছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর পর থেকেই জোর গুঞ্জন, তাকে পদত্যাগ করতে হতে পারে কিংবা তিনি নিজেই নির্বাচনের লড়াই থেকে সরে যেতে পারেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির গঠনতন্ত্র ও মার্কিন আইন অনুসারে বর্তমান নির্বাচনের লড়াই থেকে জো বাইডেন নিজেও সরে যেতে পারেন অথবা তার দল চাইলে তাকে সরিয়ে দিতে পারে।

বাইডেনকে নির্বাচনের দৌড় থেকে সরানোর ব্যবস্থা আছে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো ও ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির সদস্য অ্যালাইন কামার্ক। তার মতে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বাইডেনের কোনো বিকল্প ডেমোক্রেটিক পার্টির কাছে নেই। বাইডেন কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ বছর পার্টির তরফ থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন।

অ্যালাইন কামার্ক বলছেন, চলতি গ্রীষ্মের শেষ দিক পর্যন্তও যেহেতু বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত করা হবে না। তাই এখনো তার জায়গায় পরিবর্তন আনার সময় ও সুযোগ আছে। এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যেমন, বাইডেন পার্টির তরফ থেকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত হওয়ার আগে নিজে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তার প্রার্থিতাকে অন্যরা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, অথবা আগামী আগস্টে শিকাগোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডেমোক্রেটিক সম্মেলনের সময় নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন।

আর বাইডেন যদি নিজেকে সরিয়ে নেন বা অন্য কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যেখানে বাইডেন আর এই নির্বাচনে লড়বেন না সে ক্ষেত্রে তার বিকল্প হিসেবে হাজির হতে পারেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা। তাদের মধ্যে প্রথমেই থাকবেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তবে হ্যারিসও মার্কিন জনগণের মধ্যে খুব একটা জনপ্রিয় নন।

কমলা হ্যারিস ছাড়া বাইডেনের বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে মিশিগান অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার। কমলা হ্যারিসের মতো গ্রেচেনও একজন নারী। তবে তার জনপ্রিয়তাও খুব একটা বেশি নয়। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিবহনমন্ত্রী পিট বুটিগিগও বাইডেনের বিকল্প হতে পারে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের সময় বুটিগিগ আইওয়া ও নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে জিতেছিলেন।

বাইডেনের আরেক বিকল্প হতে পারেন পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শ্যাপিরো। তবে বিশ্লেষকদের মতে, তুলনামূলক কমবয়সী জশ শ্যাপিরোকে শিগগির নির্বাচনের বিকল্প বলে ভাবা হচ্ছে না। তাকে মোটাদাগে ২০২৮ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কলোরাডোর গভর্নর ও সাবেক কংগ্রেসম্যান জ্যারেড পোলিসও বাইডেনের বিকল্প হতে পারেন। এমনকি তিনি একাধিকবার জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচনে লড়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন।

তবে বাইডেনের বিকল্প হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার যার নাম উচ্চারিত হয়েছে তিনি হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসম। তবে তার নীতি অনেকটাই বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি ঘেঁষা। তাই বিশ্লেষকেরা মনে করেন, গেভিন নিউসমকে মনোনীত করার অর্থ, একজন রিপাবলিকান ঘেঁষা ব্যক্তিকেই মনোনীত করা।

এর বাইরে, জর্জিয়ার সিনেটর রাফায়েল ওয়ারনক, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা, মিনোসোটার সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচার এবং কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশার বাইডেনের জায়গা নিতে পারেন আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *