বান্দরবানে ঝিরি শুকিয়ে যাওয়ায় পানির তীব্র সংকট
বান্দরবানে ঝিরির পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে পাহাড়ি বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাভাবিক জনজীবন। বিশুদ্ধ পানির অভাবে নদী ও পাহাড়ে জমে থাকা দূষিত পানি পান করে জীবন ধারণ করছেন দুর্গম এলাকার প্রায় কয়েক হাজার বাসিন্দা। যার ফলে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।
অপরিকল্পিত জুম চাষ, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও ঝিরি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের জন্য পানির এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। এ দিকে বান্দরবান সদর উপজেলার রেইছা এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, তীব্র তাপদাহের কারণে এবং ঝিরিগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির এই সংকট দেখা দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় বসবাসকারীদের ঝিরির গর্তে জমানো পানি একমাত্র উৎস।
সুয়ালক ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, ছোট ছোট পাত কুয়া সৃষ্টি করে ঝিরির পানি সংগ্রহ করি আমরা। সরকারি-বেসরকারিভাবে স্থাপনকৃত রিংওয়েল-টিউবওয়েল ও জিএফএস লাইনগুলো পড়ে রয়েছে অকেজো অবস্থায়। যার কারণে পাহাড়ে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে জুম চাষ, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও ঝিরি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন পানি সংকটের মূল কারণ। দিনদিন এই পানির সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। পাহাড়ে পাথর উত্তোলন দ্রুত বন্ধ না করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে বলে মনে করেন মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ বিভাগের এ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ের ঝিরিগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানির লেয়ার মাটির অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় রিংওয়েল ও গভীর নলকূপেও পানি উঠছে না। তবে বান্দরবান জেলায় সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বান্দরবান ও লামা পৌরসভায় এডিবির অর্থায়নে দুটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আরও দুটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেলে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় সুপেয় পানির সংকট কমে যাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।