বালু উত্তোলনের ফলে মুছাপুর স্লুইসগেট ভেঙে গেছে অভিযোগ
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের যোগসাজশে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ডাকাতিয়া নদী এলাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।
এর ফলে উজানের পানির চাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর স্লুইসগেট ভেঙে তলিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১০টার দিকে মুছাপুর স্লুইসগেটটি ভেঙে যায়। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
স্থানীয়রা জানায়, ২০০৪ সালে ডাকাতিয়া নদীর মুখে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে মুছাপুর রেগুলেটের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এর কাজ শেষ হয় ২০০৯ সালের দিকে। এতে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর, চরপার্বতী চরহাজারী ইউনিয়ন নদী ভাঙা এবং অতিরিক্ত জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পায়। সোমবার সকালের দিকে প্রথমে রেগুলেটরে একটু ফাটল দেখা দেয়। এরপর সকাল ১০টার দিকে রেগুলেটরের মাঝখানের অংশ ভেঙে যায়। একপর্যায়ে পুরো রেগুলেটর ভেঙে ডাকাতিয়া নদীতে তলিয়ে যায়।
এরআগে, গত ২৪ আগস্ট নোয়াখালীর বন্যার পানি নামাতে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটরের তিন মিটার বাই তিন মিটার আয়তনের ২৩টি গেটের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়। ফলে কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক উৎকণ্ঠা দেখা গেছে।
মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম চৌধুরী শাহীন বলেন, গত ৪ বছর ধরে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর ও তার ছোট ভাই জলদস্যু জালাল মুছাপুর রেগুলেটর এলাকার ডাকাতিয়া নদী থেকে অন্তত ৫০ কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে। ওই বালু উত্তোলনের কারণে আজ মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে তলিয়ে গেছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, বালু উত্তোলনের টাকার ভাগ পেতেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, কাদের মির্জার স্ত্রী আক্তার জাহান বকুল ও তার ছেলে তাশিক মির্জা কাদের। সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন এ ঘটনায় জড়িতদের তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের ফোনে কল করা হলে তাদের মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগ করা হলে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিকবার সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, তার যোগসাজশে বালু উত্তোলনের বিষয়টি সত্য নয়।