চট্টগ্রাম

বিবিরহাটে এক গরু দুবার জবাই!

চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম পশুরবাজার বিবিরহাট। হাটের ইজারাদার না পাওয়ায় খাস কালেকশনের মাধ্যমে একদিকে হাসিল আদায় করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। অন্যদিকে গরু নামানোর আগেই ‘খাইন’ (গরু রাাকার স্থান) ভাড়া দিতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ৪০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত। এ যেন এক গরু দুবার জবাই। দেখভালের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এ টাকা আদায় করছেন স্থানীয় কাউন্সিলর মোবারক আলী।

তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি কাউন্সিলর মোবারক স্বীকার করলেও, কোনো ‘উপরি’ কামাই কিংবা খাইন ভাড়া নয়, ত্রিপল, প্যান্ডেলিং, লাইটিং এবং পরিচ্ছন্নতা বাবদ এককালীন ‘খরচ’ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। তার দাবি, ওই টাকা ‘খুশি’ মনে দিচ্ছেন বেপারিরা।

এদিকে বাজারে ক্রেতা না থাকায় বেচাবিক্রি কম, তার ওপর কাউন্সিলরের লোকদের ‘উপরি’ দিতে গিয়ে দিশেহারা বেপারিরা। পশু এনে যেন তাদের মহাভুল। এসব কারণে সামনের হাটে পশু নিয়ে আসবেন কিনা—এ নিয়েও চিন্তা করছেন বেপারিদের কেউ কেউ।

কাউন্সিলরের এমন নীরব ‘চাঁদাবাজির’ কারণে বেপারি কম আসলে বা বেচাবিক্রি কম হলে পশুরহাট থেকে রাজস্ব আদায়ে আরও ভাটা পড়বে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্তারা। তারা বলছেন, মেয়রের অনুপস্থিতিতে এবার ‘পোয়াবারো’ ওই কাউন্সিলরের। ইচ্ছা থাকলেও কঠোর নির্দেশনার অভাবে কিছুই করতে পারছেন না তারা।

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে প্রভাবশালীরা দখলে রেখেছে এই ঐতিহ্যবাহী পশুর বাজারটি। ফলে তিন তিনবার টেন্ডার আহ্বান করেও বাজারটি ইজারা নিতে আগ্রহ দেখাননি কোনো ব্যবসায়ী। এতে দেড় কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাতে বসেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

নগরের মুরাদপুর এলাকার এই হাটে পরপর দুইদিন (১১ ও ১২ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্যবারের তুলনায় গরু এসেছে অনেকটা কম। বেপারিরা পার করছেন অলস সময়। প্রতিবার অন্তত চার ঘণ্টা হাট ঘুরে বিক্রি হতে দেখা গেছে সর্বোচ্চ ১১টি গরু। যেখানে অন্যান্য হাটে বেচাবিক্রি এর দ্বিগুণেরও বেশি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত দুইশ বেপারি গরু নিয়ে এসেছেন। কিন্তু শনিবার থেকে শুরু হওয়া বাজারে বিক্রি নেই বললেই চলে। অধিকাংশ বেপারি অলস সময় কাটাচ্ছেন। বিক্রি না থাকায় ক্ষতির আশঙ্কার চিন্তার ছাপ ছিল প্রায় সবার মুখে। বাজারে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে একটি মাত্র পথ। বৃদ্ধ ও শিশুদের পশুর হাটে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়নি কোনো ব্যবস্থা।

সরেজমিনে গিয়ে এবং বেপারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাটে গরু রাখার জন্য খুঁটি গেঁড়ে নম্বর দিয়ে সিরিয়াল করে তৈরি করা হয়েছে খাইন। একেকটি খাইনে ৩০ থেকে ৩৫টি গরু রাখা যায়। গরু কম থাকলে এক খাইন ভাগ করে নেন দুই বেপারি মিলে। আর এসব খাইন বাবদ তাদের কাছ থেকে এককালীন আদায় করা হচ্ছে ৪০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত।

জায়গার ভাড়া লাখ টাকা!

মাগুরা জেলা থেকে ৩৬টি গরু নিয়ে বিবিরহাটে এসেছেন মো. রাসেল। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে আসার আগে আঁড় (খাইন) কিনতে হয়। একেকটা আঁড়ে এক লাখ টাকা করে খরচ। গতবারও এই হাটে এসেছিলাম। তখন এক লাখ টাকা দিয়েছিলাম।’

চাপাইনববাগঞ্জ থেকে আসা হাটের একমাত্র নারী বেপারী সালমা খাতুন বলেন, ‘গরু রাখার জন্য গতবারও ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। এবারও একই টাকা দিচ্ছি। টাকাটা মূলত জায়গার ভাড়া হিসেবে নেয়। শুধু আমি না, সবার কাছ থেকেই এই টাকা নেওয়া হয়।’

‘এই অতিরিক্ত টাকা যদি আমাদের কাছ থেকে না নেওয়া হতো তাহলে গরু অনেক কম দামে ক্রেতারা কিনতে পারতো। আমাদের বেচাবিক্রিও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতো।’— যোগ করেন রাজশাহী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করা এই উদ্যোক্তা।

কুমিল্লার চান্দিনা থেকে এই হাটে ৩০টি গরু নিয়ে এসেছেন বৃদ্ধ তাজু বেপারি। তিনি বলেন, ‘এই জায়গার ভাড়া এক লাখ টাকা। তাতে গরু বিক্রি হোক বা না হোক এটা দিতে হবে।’

এই টাকা তো করপোরেশন নেয় না, তাহলে কাকে দেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন তো আরও চোর বেশি। ওরা আরও বেশি টাকা খায়। টাকা না দিলে জায়গা দিবে না। জায়গা না দিলে আমরা কই যাব? এখানে এসে ঠেকে গেছি।’

হাটের মধ্যেই এ প্রতিবেদকের কথা হয় আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তির সাথে। তিনি চসিকের পক্ষে হাসিলের টাকা কালেকশন করেন দাবি করে প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাসিলের বাইরে খাইন বাবদ যে টাকা নেওয়া হয় সেগুলো নিতে হবে। এখানে হাসিল তুলতে অনেক লোক নিয়োগ করা। লাইটিং খরচও আছে। এসবের জন্য টাকা দিতে হবে না? এজন্যই টাকা নেওয়া হয়।’

এই ব্যক্তির হিসেবে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার গরু ওই হাটে উঠেছে এবং শতাধিক বেপারি এসেছেন এই হাটে।

টাকা তোলেন ‘আজগর মামা’

হাটে একাধিক বেপারির সাথে কথা বলে ও সরেজমিন অনুসন্ধান করে জানা গেছে, মূলত আজগর খান নামে এক ব্যক্তি এই টাকা তোলেন। বেপারিদের কাছে তিনি ‘আজগর মামা’ হিসেবেই পরিচিত। তার সাথেই হাটে আসার বিষয়ে টাকার কন্ট্রাক্ট হয় বেপারীদের। তাকে টাকা না দিলে এই হাটে গরু তোলা যাবে না— এমন নির্দেশনা স্থানীয় কাউন্সিলরের!

নাম প্রকাশ করতে না চেয়ে এক বেপারি বলেন, ‘কুষ্টিয়ার কুমারখালি এলাকা থেকে থেকে গরু এনেছি। গরু বিক্রিই হচ্ছে না। এবার বাড়িতে গিয়ে খেতে ভাত পাবো না। চট্টগ্রাম বসে রিকশা চালিয়ে খেতে হবে। এর ওপর ১৪টি গরুর জন্য ৪৫ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এখানেই তো মাইর (লস)। সাগরিকায়ও নেয় ৪০ হাজার টাকা করে।’

কাকে টাকা দেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের আজগর মামার সাথে কন্ট্রাক্ট হয়। উনিই আমাদের এখানে টাকার বিনিময়ে জায়গা দেন। এখন উনি কার লোক তাতো জানি না। তবে শুনেছি এখানকার কাউন্সিলর যে আছেন তার লোক। তিনিই সব ম্যানেজ করে দেন।’

‘আজগর মামা’ নয়, সব জানে কাউন্সিলর

হাটের বেপারিদের দেওয়া তথ্যে সেই ‘আজগর মামা’র সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এই প্রতিবেদক। তার মুঠোফোনে কল করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রথমে কথা না শোনার ভান করে এড়িয়ে যান তিনি।

এরপর আবারও কল করে কাউন্সিলর মোবারক আলী’র কথা বলে টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না না না না না, নাহ্। আমরা কোনো টাকা নেই না।’

এই প্রতিবেদকের কাছে বেপারিদের এ সংক্রান্ত অভিযোগ সংরক্ষিত আছে—এমন কথা জানালে তিনি সুর পাল্টে বলেন, ‘এটা আমি জানি না ভাইয়া। আমি ফ্রি হয়ে আপনাকে ফোন দেবো। এগুলো মোবারক ভাই যেরকম বলে আমরা সেরকম করি। আলোকসজ্জার জন্যে মোবারক ভাই আমাদেরকে টাকা নিতে বলেছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে চসিকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘খাইন ব্যবসাটি ওপেন সিক্রেট হয়ে গেছে। মেয়র মহোদয় দেশের বাইরে থাকায় এবার নির্দেশনার ঘাটতি ছিলো। জানতে পেরেছি ইজারাদাররা গরু ব্যবসায়ীদের দাদন দেয়। আর সেজন্যই দূর-দূরান্ত থেকে আসা গরু বেপারিরা খাইনের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিতে বাধ্য হয়। যেখানে চসিকের স্থায়ী হাটগুলোতেই খাইন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সেখানে অস্থায়ী হাটগুলোয় এগুলো কন্ট্রোল করাতো অনেক দূরহ বিষয়।’

হাট ‘দখলে’ নিতে কাউন্সিলরের কৌশল

বিবিরহাট বাজারের সাবেক এক ইজারাদার জানান, এই হাট ঘিরে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী। গত দুইবছর ধরে হাটটি তিনি ইচ্ছেমাফিক পরিচালনা করেন। ইজারায় আগ্রহীদের ঠেকাতে নিজ কার্যালয়ের পাশের বাজারটির জায়গা ভাড়া দিয়েছেন কয়েকটি এগ্রো ফার্মের কাছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারের ভেতর প্রবেশ করতেই হাতের বাঁ পাশের কাউন্সিলর কার্যালয় ঘেঁষেই গড়ে তোলা হয়েছে খাজা গরীবে নেওয়াজ ডেইরি ফার্ম ও হযরত সলিম উল্লাহ শাহ ডেইরি ফার্ম। এছাড়া শেষ প্রান্তে রয়েছে মেসার্স সামির অ্যান্ড সামিরা এগ্রো ফার্ম নামক একটি প্রতিষ্ঠান। যে কারণে স্বাভাবিকভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন প্রকৃত ইজারাদাররা। তাই তিন দফা দরপত্র আহ্বান করা হলেও সাড়া দেননি ইজারাদাররা।

জানা গেছে, টানা ২২ বছর ধরে চসিকের রাজস্ব আয়ে ভূমিকা ছিল বাজারটির। ২০২৩ সালের শুরুতে মুরাদপুর মোড়ে ব্রিজ ও সড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য প্রায় ছয় মাস রাস্তা বন্ধ থাকে। ওই বছরই বিবিরহাট বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় স্থানীয় ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলীর হাতে। ইজারা না হওয়ায় বিবিরহাট বাজার থেকে খাস কালেকশনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় শুরু হয়।

এবার বাজারটির সরকারি ইজারা মূল্য ছিল ২ কোটি ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৭৭৭ টাকা। ইজারা না হওয়ায় ঈদের আগ পর্যন্ত সপ্তাহে দুইদিন বাজার বসত হাটটিতে। সেখান থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা রাজস্ব পেত চসিক।

কাউন্সিলর যা বলছেন…

চসিকের ৭ নম্বর ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী গরু বেপারিদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এটা খাইন বাবদ নয়, হাটের ত্রিপল, প্যান্ডেল, লাইটিং এবং পরিচ্ছন্নতা বাবদ কিছু টাকা বেপারিদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। এই হাটে ইজারাদার না পাওয়ায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এসবের ব্যবস্থা করা হয়নি। ত্রিপল এবং লাইটিং বাবদই এখানে ৯ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। এজন্যই খরচটা নেওয়া হয়।’

‘লাখ টাকার গরুকে খোলা আকাশের নিচে তো রাখা যায় না। নিয়ম হচ্ছে, হাসিল আদায় হয় বিক্রেতার কাছ থেকে। আমাদের এখানে ঐতিহ্য হয়ে গেছে হাসিল দেবেন বিক্রেতা। আমরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে হাসিল নিই না। বেপারিরা যদি নিজ উদ্যোগে ত্রিপলের ব্যবস্থা করে তাইলে বিবিরহাটে আর গরু আসবে না। তাই আমরা ব্যবস্থা করি এটা। এই খরচটা বেপারিরা দেয়। তবে বলপূর্বক নেওয়া হয় বিষয়টা এরকম নয়। কারও ৪০টি গরু থাকলে গরুপ্রতি হয়তো এক হাজার টাকা করে পড়ে।’

ইজারাদার ঠেকাতে কৌশলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বিড না করে তাইলে সেটা কি আমার অপরাধ? এটাতো ওপেন টেন্ডার ছিলো। ইজারাদার না পেয়ে গত ৯ তারিখ হাটটি আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ত্রিপল এবং লাইটিং এর ব্যবস্থা করা না হলে কি বেপারিরা গরু আনতো? তাহলে তো হাটই জমতো না। এখন এসব করাটা কি আমার অপরাধ হয়েছে? আমাকে তো এটা চসিক অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছে। আমি তো নিজ থেকে হাটের দায়িত্ব নেইনি।’

বিবিরহাটের বাজারের আশেপাশেই অন্তত ৩০ স্পটে এগ্রো’র সাইনবোর্ড দিয়ে পশু বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে এই কাউন্সিলর বলেন, ‘বিবিরহাট বাজারে গরু কিভাবে আসবে? এটার আশেপাশেই ৩০টি এগ্রো ফার্ম সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে পশু বিক্রি করছে, কেউ হাসিল ছাড়া গরু কিনতে পারলে হাসিল দিয়ে কেন গরু কিনতে আসবে?’

চসিক বলছে…

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এস্টেট অফিয়ার রেজাউল করিম হাট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে বলেন, ‘চসিকের লোক দিয়ে হাসিলের টাকা খাস কালেকশন করা হচ্ছে। যেহেতু ইজারাদার পাওয়া যায়নি সেহেতু হাটের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় কাউন্সিলর রয়েছেন। আমাদের লোকরা শুধু হাসিল নেবে। আমার জানামতে ওখানে কিছু পলিটিক্যাল লোকজন খাইন ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। এটা আমরা চাইলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। তবে আমি মেয়র মহোদয়কে জানিয়েছি, খাইন ব্যবসার কারণে বেপারির আগ্রহ হারাচ্ছে। গরুরহাটগুলো খাইন ব্যবসার কারণে আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’

অলিগলির অবৈধ হাট গড়ে ওঠার পেছনেও খাইন ব্যবসা দায়ী উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সময়টা খুব কম। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী চাইলে সহযোগিতা করতে পারে আমাদের। দিনশেষে খাইন ব্যবসা টিকে থাকলে চসিকের হাটগুলো থাকবে না। আর সরকার রাজস্বও হারাবে। আমি আমাদের প্রধান নির্বাহীকে বলেছি যে, খাইন ব্যবসার কারণেই অলিগলিতে অবৈধ হাটগুলো গড়ে উঠছে। চসিকের হাটগুলোতে খাইন ভাড়া দিতে হয় বিধায় বেপারিরা অবৈধ হাটগুলোতে গরু নিয়ে যাচ্ছেন।’

যা বলছে পুলিশ

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘একটা হচ্ছে হাসিল আদায়ের টাকা। যেটি চসিকের রাজস্ব খাতে যোগ হয়। খাইন ভাড়ার বিষয়টা প্রত্যেক বাজারেই হচ্ছে। যারা ইজারা নেয় হাট তারা নির্দিষ্ট একটা জায়গা বেপারিদের দেয়। বিনিময়ে বেপারিরা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা তাদের পরিশোধ করে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব বাজারেই এটি প্রচলিত। বাজার নিয়ন্ত্রকদের সাথে বেপারিদের একটা বোঝাপোড়া থাকে। আমাদের কাছে যতক্ষণ অভিযোগ না করে ততক্ষণ আমরা কিছুই করতে পারি না। যদি তারা আমাদের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করে তখন এটার বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো। এখানে মূল কাজটাই হচ্ছে চসিকের। তাদের ম্যাজিস্ট্রেট আছে। যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্ট আছে।’

সড়কে কোনো পশুরহাট বসানো হলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *