চট্টগ্রামসীতাকুন্ড

বিয়ের তিনমাসেই লাশ হলেন সীতাকুণ্ডের জুয়েল

টগবগে যুবক জুয়েল (২৮) বিয়ে করেছিলেন তিনমাস আগে। সে হিসেবে বিয়ের পর এবারই প্রথম ঈদ আসছে। ফলে ঈদ নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করেছিল সে। বউয়ের সাথে শ্বশুড়বাড়িতে নিয়ে যাবেন মা-বাবা ও ভাইদের সবাইকে। সবাই মিলে খুব আনন্দ করবেন, বেড়াবেন আরো নানান জায়গায়। কিন্তু মাত্র একটি রাতেই বদলে গেছে সব কিছু। প্রথম রোজার রাতেই নামাজ পড়তে বের হয়ে লাশ হল জুয়েল। তার নাকে রক্তের চিহ্ন থাকলেও ঠিক কীভাবে জুয়েল মারা গেছেন তা নিশ্চিত করতে পারছেন না কেউ। কিন্তু তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলেই ধারণা এলাকাবাসী ও স্বজনদের। ফলে জুয়েলের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

অন্যদিকে মৃত্যুর একদিন পর বুধবার বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ এলাকায় নিয়ে আসা হলে স্ত্রী, মা-বাবাসহ স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে এলাকার বাতাস। নিহত জুয়েল সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর চৌধুরীঘাটা এলাকার বাসিন্দা মো. মিয়ার ছেলে।

সরেজমিনে বুধবার সোনাইছড়ির শীতলপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জুয়েলের বাড়িতে এখন শোকের মাতম চলছে। সকলের একই কথা, এ কি হয়ে গেল। কেন নিরীহ জুয়েলের মৃত্যু হল এভাবে। কাঁদতে কাঁদতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী, মা, বাবা ও ভাইয়েরা। তাদের কান্নায় উপস্থিত সবার চোখে জল এসে যায়।

স্থানীয়রা জানান, জুয়েল বাড়ির কাছে বগুলা বাজারে একটি পান-সিগারেটের দোকান করতেন। মঙ্গলবার প্রথম রোজার দিন সন্ধ্যায় বাড়ির জন্য বাজার করে ঘরে ফেরেন তিনি। এরপর তারাবি নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। ঐ দিন সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। এর পরদিন মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে শীতলপুর এলাকায় রেললাইন থেকে আনুমানিক ১৯-২০ ফুট দূরে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময় জুয়েলের নাক ও মুখে সামান্য রক্তের দাগ ছাড়া আর কোন আঘাত ছিল না।

জুয়েলের বাবা বলেন, আমার ছেলে কিভাবে মারা গেছে আমি কিছুই জানি না। কিছুই বুঝতে পারছি না। কাকে দায়ী করব?

তিনি বলেন, ছেলের বিয়ে হয়েছিল তিনমাস আগে। কুমিরায় শ্বশুরবাড়ি। এবার বউসহ আমাদের সবাইকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাবে, আরো অনেক আনন্দ করবে বলেছিল। এখন কি হতে কি হয়ে গেল? এদিন ছেলের লাশ বাড়িতে আসার পর কাঁদতে কাঁদতে পাগলের মতো হয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনরা।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা এখনই কিছু বলতে চাই না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *