বিয়ের দাবিতে অনশন করায় খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, উদ্ধার করলো পুলিশ
রাজশাহীর তানোরে পরকীয়া প্রেমের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছিলেন এক গৃহবধূ। পরে তাকে দড়ি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন পরকীয়া প্রেমিক শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেল।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তা ওই এলাকার মানুষজনের দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
রাজশাহীর তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, বিষয়টি শুনেই তিনি থানা থেকে ফোর্স পাঠিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেন। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি বলেন, এ ঘটনার পর তার স্বজনদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে পুলিশের কাছে ওই গৃহবধূ মৌখিক অভিযোগ করেছেন যে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের গাল্লা বৈদ্যপুর গ্রামের শাহিন তার সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রাখেন। এক পর্যায়ে শাহিন বিদেশ যান। এর ফাঁকে ওই মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। শাহিন বিদেশ থেকে এসে পুনরায় ওই মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রেমের সম্পর্কের কারণে ওই গৃহবধূর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তোলেন শাহিন। এর পর্যায়ে তিনি গৃহবধূ গর্ভবতী হয়ে পড়েন। কিন্তু শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেলের কুপরামর্শে গর্ভপাত ঘটান। এরপর থেকে একাধিকবার ওই গৃহবধূ শাহিনকে বিয়ের কথা বলেন। কিন্তু বিয়ে না করে উল্টো তাকেই নানা ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
সর্বশেষ গত বুধবার (২৮ আগস্ট) শাহিনকে তানোরের মুন্ডুমালা বাজারে দেখে বিয়ের দাবিতে গৃহবধূসহ স্বজনরা চাপ দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু শাহিনের চাচাতো ভাই সোহেল স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহরাবের মধ্যস্থতায় বিয়ের কথা বলে শাহিনকে ছাড়িয়ে নেন। তারপর থেকেই শাহিন ও সোহেল নানাভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দেন। এছাড়া পরদিন বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ওই গৃহবধূ শাহিনকে বিয়ে করার জন্য তার বাড়িতে অনশন শুরু করেন। কিন্তু শাহিন ও তার চাচাতো ভাই সোহেল তাকে মারধর করে দড়ি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রেমের সম্পর্কে থাকাকালে নানা প্রলোভন দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে তার কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে নগদ তিন লাখ টাকা ও ২৫ হাজার টাকা দামের একটি স্মার্ট ফোন নিয়ে নেন শাহিন। বুধবার জানতে পারেন শাহিন দুয়েকদিনের মধ্যে অন্য কাউকে বিয়ে করবে। কিন্তু কোনো উপায় না থাকায় তিনি শাহিনকেই বিয়ে করতে চান।