বুদ্ধিজীবী হত্যার মাস্টার মাইন্ডদের কেন দেশে আনা সম্ভব হয়নি
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড ছিলেন বিদেশে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান।
ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, ‘আশরাফুজ্জামান ছিলেন বুদ্ধিজীবী নিধন পরিকল্পনার চিফ এক্সিকিউটর, মুঈনুদ্দীন ছিলেন অপারেশন ইনচার্জ। তারা এখন বিদেশে রয়েছেন।
তবে বিচারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে ফেরত আনার চেষ্টা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে তাদের ফেরত আনার আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।
চৌধুরী মাইনুদ্দিন আছেন যুক্তরাজ্যে, আশরাফ আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। গত রোববার (১০ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জনকূটনীতি অনুবিভাগ মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন।
তিনটি মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য দুইজন হচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। এই দুইজনের ফাঁসি কার্যকর হলেও বাকি দুজনকে ১০ বছরেও দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। যদিও তারা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই পলাতক আসামিকে ফিরিয়ে আনতে সরকার চেষ্টা করছে বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার ( ১৪ ডিসেম্বর) দেশের একটি গণমাধ্যমকে জানান, ওই দুজনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। নিয়ম ও আইন দিকগুলো পর্যালোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি জানানো হবে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় না। ফলে ওইসব দেশে আশ্রয় নেওয়া কোন অভিবাসীকে নিজ দেশে জোর করে ফেরত পাঠানো হয় না। এ কারণে আইনি জটিলতা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার ঘটনায় মুঈনুদ্দীন অভিযুক্ত। আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোট ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। ট্রাইব্যুনালের রায়ে সব কটি প্রমাণিত হয়েছে।