বৃষ্টির নামাজ নিয়ে কোরআন-হাদিসে যা বলা হয়েছে
দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে একটু স্বস্তির বৃষ্টির আশায় বিশেষ নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। প্রার্থনা করছেন মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে।
পবিত্র কোরআনুল কারিম ও হাদিস শরিফে এ বিষয়ে বেশকিছু নিদর্শন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা আরাফের ৫৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তার রহমতের বৃষ্টির সময় বাতাসকে সুসংবাদবাহকরূপে প্রেরণ করেন। যখন তা ঘন মেঘ বহন করে, তখন নির্জীব ভূখণ্ডের দিকে বৃষ্টি আকারে বর্ষণ করেন। তারপর তার মাধ্যমে সব ধরনের ফল-ফসল উৎপাদন করান’।
এছাড়া বৃষ্টি বর্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদ বিবরণও রয়েছে বেশকিছু আয়াতে। অনাবৃষ্টি হলে মহান আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য দোয়া করার নিয়ম রয়েছে। ইসলামে বৃষ্টির জন্য দোয়া করার জন্য যে নামাজ আদায় করার নিয়ম রয়েছে সে নামাজকে ‘ইসতিসকা’ বলা হয়।
ইসতিসকা শব্দের অর্থ বৃষ্টির জন্য দোয়া করা। হাদিস শরিফের বিভিন্ন গ্রন্থে ইসতিসকার নামাজ ও দোয়ার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
মহানবী (সা.) মসজিদে নববীর মিম্বারে দাঁড়ানো অবস্থায় বৃষ্টির জন্য দোয়া করেছেন। আবার ঈদগাহে কিংবা খোলা ময়দানে বিশাল সমাবেশে ইসতিসকার নামাজে ইমামতি করেছেন। বৃষ্টির জন্য ২ হাত তুলে মোনাজাতও করেছেন।
হাদিস শরিফে আছে, প্রিয় নবী (সা.) বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে বের হলেন। তিনি কেবলামুখী হয়ে দোয়া করলেন এবং নিজের চাদরখানা উল্টিয়ে দিলেন। তারপর ২ রাকাত নামাজ আদায় করেন। তিনি উভয় রাকাতে কেরাত পাঠ করেন সশব্দে।
অনাবৃষ্টি বা খরাজনিত কারণে বৃষ্টির জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে দোয়া করা সুন্নত। অনাবৃষ্টি আক্রান্ত এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ভালো পোশাক পরিধান করে খুবই বিনীতভাবে হেঁটে খোলা ময়দানে সমবেত হয়ে বিনম্রভাবে কাতরস্বরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। তারপর ইমামের পেছনে ২ রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। এ নামাজে আজান-ইকামত নেই। ইমাম কেরাত পাঠ করবেন উচ্চৈঃস্বরে। ইমাম তার গায়ের চাদর উল্টিয়ে নেবেন অর্থাৎ চাদরে ডান পাশ বামে এবং বাম পার্শ্ব ডানে পরিবর্তন করে কিবলামুখী অবস্থায় হাত উঠিয়ে দোয়া করবেন। এর আগে খুতবা দেবেন। বহু নজির আছে এ নামাজ শেষ হতে না হতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে থাকে। যদি না হয় মোট ৩ দিন এ নামাজ আদায় করতে হয়।