শিক্ষা

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে নতুন নীতিমালা

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায় ছাড়া অন্য পদসমূহে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন থেকে নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকসহ অন্য পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে। এতে সই করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষক ও নিবন্ধন প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) আওতা (প্রবেশ পর্যায়ের পদ) ব্যতীত অন্য পদসমূহে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গর্ভর্নিং বডি কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়োগে প্রতিষ্ঠানভেদে পদ্ধতিগত ভিন্নতা রয়েছে। এসব পদে নিয়োগ কার্যক্রমে অভিন্নতা ও স্বচ্ছতা আনার জন্য নির্দেশমালা জারি করা হলো।

শূন্য পদের চাহিদা যেভাবে
ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা, ২০২১’ এবং এর সর্বশেষ পরিমার্জন অনুযায়ী যথাযথভাবে যাচাইপূর্বক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শূন্য বা নবসৃষ্ট পদের প্রাপ্যতা নিরূপণ করবে। শূন্য পদের ধরন (কাঠামোভুক্ত, সৃষ্ট, অননুমোদিত সৃষ্ট, খণ্ডকালীন, চুক্তিভিত্তিক) উল্লেখপূর্বক শূন্য পদের বিবরণী প্রণয়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত গভর্নিং বডি বা ব্যবস্থাপনা কমিটি বিদ্যমান না থাকলে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।

প্রাপ্যতাবিহীন পদে নিয়োগ করা যাবে না। প্রাপ্যতাবিহীন পদে কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী নিয়োগ করা হলে তার সমুদয় দায়ভার নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে নিয়োজিত সবার ওপর ব্যক্তিগতভাবে বর্তাবে। নিয়োগকৃত শিক্ষক-কর্মচারীর শতভাগ বেতন-ভাতা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বহন করতে হবে।

প্রাপ্যতাবিহীন পদে নিয়োগকৃত কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মউশি) প্রস্তাব পাঠানো যাবে না। এ ধরনের প্রস্তাব পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাপ্যতাবিহীন পদে নিয়োগের জন্য মাউশির মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করাও যাবে না।

শূন্য পদ পূরণে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি
শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দেশের বহুল প্রচারিত দুটি দৈনিক পত্রিকায় (একটি জাতীয় ও একটি স্থানীয়) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও সম্ভাব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তির ব্যাপক প্রচার করতে হবে।

‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১’ ও এর সর্বশেষ পরিমার্জন অনুযায়ী শূন্য পদের ধরন (এমপিও কিংবা নন-এমপিও পদ), সংখ্যা, বিষয়, আবেদন ফি, প্রত্যেক পদের জন্য নিয়োগ যোগ্যতার আবশ্যকীয় শর্তাবলি, বেতন গ্রেড, আবেদন দাখিলের নিয়ম এবং আবেদন দাখিলের সর্বশেষ তারিখ ও সময় বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকতে হবে।

প্রাপ্ত আবেদনসমূহ যাচাই-বাছাই
প্রাপ্ত আবেদনের সংক্ষিপ্ত তালিকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ড বা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। প্রাপ্ত আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের নিমিত্ত ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির কর্তৃক রেজুলেশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে তিন সদস্যের একটি ‘আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই কমিটি’ গঠন করতে হবে।

ওই কমিটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এবং এর সর্বশেষ পরিমার্জন অনুযায়ী প্রত্যেকটি পদের জন্য নিয়োগ যোগ্যতার শর্তাবলি ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস যাচাই-বাছাই করে বৈধ আবেদনকারীর তালিকা প্রণয়ন করবে। প্রাপ্ত আবেদন ও বৈধ আবেদনের তালিকা জেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।

এছাড়া নিয়োগের খরচ, নিয়োগ পরীক্ষার নম্বর বণ্টন ও সময়, লিখিত পরীক্ষার মূল্যায়ন, ব্যবহারিক এবং মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম ও মূল্যায়ন পদ্ধতি, ফল তৈরি, নিয়োগের সুপারিশ, ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির করণীয় কী হবে, তা-ও এ নির্দেশমালায় বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *