বেহাল ফটিকছড়ির ইমামনগর সড়ক
সড়কের বেশির ভাগ অংশ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সেখানে এমন কিছু গর্ত হয়েছে, যানবাহন পর্যন্ত চলাচল করতে পর্যন্ত পারে না। সড়কের ইট-সুরকি পর্যন্ত চলে গেছে। যাত্রীরা পায়ে হাঁটতেও কষ্ট পায়। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ইমামনগর সড়কটির এই করুণ দশা। ফলে এলাকাবাসীর মনে এখন ক্রমে ক্ষোভের দানা বাঁধছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি কার্পেটিং করা হয়। সে সময় সড়কে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলে কয়েক বছর যেতে না যেতেই কার্পেটিং উধাও হয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন বাববার সংস্কার করতে পৌরসভায় আবেদন করলেও কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে সড়কটির খোঁজ-খবর কেউ নেয় না।
ইমামনগর গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক মীর মাহফুজ আনাম বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য একটি সড়কের এই অবস্থা হলে উপজেলার বাকি সড়কের কী হবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। অথচ এমন বেহাল অবস্থা, এ নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। যত ভোগান্তি এলাকার লোকজনের।’
নাজিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ দিদারুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এতদিন কোনো উপায়ে চলাচল করা যেত। কিন্তু গেল বর্ষার পানিতে পুরো সড়কটি বিধ্বস্ত। এতে এলাকার হাজার হাজার লোকজন চলাচলে অসুবিধায় পড়েছেন। তারা বিকল্প সড়কে চলাফেরা করেন।’
জানা যায়, উক্ত সড়কে প্রতিদিন উপজেলার দৌলতপুর, বাবুনগর, দমদমা, ফকিরহাট, বাঁধেরপাড়, বোর্ডস্কুল ও দক্ষিণ দৌলতপুরসহ কয়েকটি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। ভাঙা সড়কের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ভোগান্তি বেশি।
বাবুনগর মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মো. জোবায়ের জানান, ‘বোর্ডস্কুল এলাকার বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় আসার জন্য এই সড়ক একমাত্র মাধ্যম। করুণ দশার ফলে সপ্তাহে তিন দিন মাদ্রাসায় যাতায়াত করি।’
গুলতাজ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সড়কের কারণে আমার প্রতিষ্ঠানে ওই এলাকার শিক্ষার্থী অনেক কমে গেছে। এছাড়া তাদের যাতায়াত ব্যয় বাড়ায় তারা নিয়মিত আসতেও চায় না। এমনিতে সড়কের বেহাল দশা, যাত্রা বিলম্ব, তার ওপর অতিরিক্ত ভাড়া।’
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের পুরো অংশেই এখন আর সড়কের কোনো চিহ্ন নেই। ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বিটুমিন তো দূরের কথা, ইট-সুরকি পর্যন্ত পানির ঢলে চলে গেছে। গাড়ি চলছে হেলে দুলে। কোনো কোনো স্থানে সড়ক হা হয়ে আছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মাওলানা মুহাম্মদ মনজুর মিয়া বলেন, ‘সড়কটি সরেজমিন দেখেছি। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কটি। এটি এলাকাবাসীকে চরম ভোগাচ্ছে। তবে সড়কটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’
নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র এ কে জাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘এই সড়কটি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিধ্বস্ত এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কার্যাদেশ পেলে দ্রুত এটি সংস্কার করা হবে।’