ব্যাংকে ফিরেছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা
এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে সাড়ে ৯ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, সুদহার বাড়ার কারণে হাতের টাকা ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। আগামীতে আরও বাড়বে।
চলতি বছরের শুরুতেই দেশে মূল্যস্ফীতি রয়েছে ৭ শতাংশের ওপরে। ওই সময় ব্যাংকে আমানত রাখলে সুদ পাওয়া যেত ৬ শতাংশ। মানে ১০০ টাকা ব্যাংকে রাখলে বছর শেষে ১ টাকা কমে যেত। ফলে আমানতকারীরা বিপুল পরিমাণ টাকা হাতে রেখেছিলেন। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর পাশাপাশি আমানতকারীদের ব্যাংকমুখী করতে চলতি বছরের জুলাই মাসে সুদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আমানতের সুদহার উঠেছে সাড়ে ৯ শতাংশে। এতে ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহ বাড়ছে গ্রাহকদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। আগের মাস আগস্টে ছিল ১৬ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে আমানত বেড়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ৯ শতাংশ।
এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ভালো ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার দিচ্ছে ৯ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশ। যেটা মূল্যস্ফীতির কাছাকাছি সুদহার। তাই আমানতকারীরা টাকা নিরাপদ জায়গা হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখতে শুরু করেছেন। কারণ, অন্যান্য জায়গার তুলনায় ব্যাংক সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। বিশেষ করে তিন মাস মেয়াদি আমানতটা মানুষ ব্যাংকে বেশি রাখে।
তবে আমানতের সঙ্গে বেড়েছে ঋণের সুদহার। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে ট্রেজারি বিলের সুদহারের ভিত্তিতে ব্যাংকঋণের সুদের হার নির্ধারিত হচ্ছে। সেটা হলো স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি নভেম্বর মাসের জন্য স্মার্ট রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো সাড়ে ৩ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাড়ে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার বাড়াতে পারে। ফলে ব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ।