ভারত-নেপাল-ভুটানের সঙ্গে কানেক্টিভিটিতে বাংলাদেশই লাভবান হবে: পর্যটনমন্ত্রী
রাজশাহীকে মাঝে রেখে সরকার ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চায় বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এ তিন প্রতিবেশী দেশের কানেক্টিভিটিতে বাংলাদেশই লাভবান হবে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল’ রাজশাহী পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠে এ ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে।
‘আমের স্বর্গে আমন্ত্রণ’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী এ ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্রের প্রায় শতাধিক স্টল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করার উদ্দেশে দেশের ভেতর থাকা দর্শনীয় স্থানগুলো প্রদর্শন করা হচ্ছে।
ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ভারতে গিয়েছিলেন তখন এই রাজশাহীর ভেতর দিয়ে কানেক্টিভিটি শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত-নেপাল-ভুটানের কানেক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করেছেন। কারণ কানেক্টিভিটি মানেই ডেভলপমেন্ট, কানেক্টিভিটি মানেই ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন। আমি আশা করি, এ কানেক্টিভিটি ব্যবহার করে রাজশাহী অঞ্চলের লোকেরা ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন করবে।
মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাশের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে যখন চিন্তা করেন, তখন বিশেষ করে রাজশাহীর উন্নয়ন নিয়েও উনার নির্দেশনা আমাদের প্রতি আসে। আমরা ইশাআল্লাহ সেইভাবে কাজ করে যাবো।
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) অভ্যন্তরীন বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী বলেন, শাহ মখদুম (রহ.) অভ্যন্তরীন বিমানবন্দরকে আমরা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছি। এটি হলে রাজশাহীর আম বিভিন্ন দেশে যেতে পারবে। অন্যান্য কৃষিপণ্যও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, রাজশাহীর ঐতিহ্য হচ্ছে রেশম। তাই এই রেশমের উন্নয়নে যা যা করা দরকার, তার সবই আমাদের সরকার করবে। ঢাকা ফিরেই আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাবো। এখানকার আম অনেক দূর চলে গেছে। এরপরও আম নিয়ে আরও গবেষণা দরকার বলে মনে করি।
কানেক্টিভিটির ওপর সরকার সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, আগে ঢাকা থেকে সড়ক পথে রাজশাহী আসতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগত। এখন ৪ ঘণ্টায় আসা যায়। রাস্তার কাজ চলমান আছে। এগুলো শেষ হলে ৩ ঘণ্টায়ও আসা যাবে। এখানকার রেলপথের উন্নয়ন হচ্ছে। বিমানবন্দরেরও উন্নয়ন হবে। আমরা রাজশাহীকে মাঝে রেখে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। এটি হলে রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা এগিয়ে যাবেন বলে আশা করছি।
পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য পদ্মার চরে ‘রিভার সিটি’ গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ফারুক খান বলেন, রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমার বাসায় গিয়েছিলেন। পদ্মা নদীতে যে চর জেগে আছে সেটা নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে পর্যটনের জন্য একটা রিভার সিটি করা যায়। আমি তাকে কথা দিয়েছি। সবার সহযোগিতায় সেটা আমরা করতে চাই। রাজশাহী মহানগরে পর্যটন মোটেল আছে। তবে এটাকে আমরা ফাইভ স্টার মোটেল হিসেবে রূপান্তর করতে চাই।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মাসুদুর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।