ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের নিতে মালয়েশিয়ার কাছে আবেদন
ভিসা পাওয়া যেসব কর্মী নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তাদের নেওয়ার জন্য দেশটির সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার আবেদন করেছে। ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মোহাম্মদ হাশিমের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। হাইকমিশনার হাজনাহ বলেছেন, কর্মী নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সময় বৃদ্ধির যে আবেদন করেছে, তা বিবেচনা করার জন্য তার দেশের সরকারের কাছে জানাবেন।
বুধবার (৫ জুন) রাজধানীর ইস্কাটনে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল আলম, নূর মো. মাহবুবুল হক, যুগ্ম সচিব আবু রায়হান মিঞসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘২০২১ সালে মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তির শেষ তারিখ ছিল ৩১মে। সেটা পরিপূর্ণ করতে মালয়েশিয়া সরকার ও আমাদের সরকার উভয়ের চেষ্টা ছিল। আমাদের প্রায় ১৭ হাজার কর্মীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। আমরা মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের মাধ্যমে তাদের সরকারের কাছে আবেদন করেছি– অন্তত যাদের ভিসা হয়েছে, তাদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হোক। আমরা আশা করছি– মালয়েশিয়া এ আবেদন বিবেচনা করবে, তারা রক্ষা করার চেষ্টা করবে।’
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মোহাম্মদ হাশিম বলেন, ‘মালয়েশিয়া আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে– বাংলাদেশ তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের রয়েছে ঐতিহাসিক সম্পর্ক। বাংলাদেশের এ সময় বৃদ্ধির আবেদন বিবেচনার জন্য আমাদের সরকারকে জানাব।’
নতুন করে সময় বাড়ানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে– মালয়েশিয়া তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। আমার বিশ্বাস– মালয়েশিয়া এ আবেদন বিবেচনা করবে।’
নির্ধারিত সময়ে যেসব কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তাদের অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করা হয়– যাদের বিএমইটি (বিদেশ যেতে আগ্রহী কর্মীদের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অধীন নিবন্ধন) কার্ড আছে, তাদের তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকার কথা।
জবাবে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছি। কোনো কারণে কর্মীরা যেতে পারেনি, কোথায় সমস্যা হয়েছে, কারা এই সমস্যার সৃষ্টি করেছে– এসব খুঁজে বের করবেন কমিটির সদস্যরা। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যাদের নামে অভিযোগ আসবে, যারা দোষী সাবস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
বিএমইটির ছাড়পত্র না পাওয়া কর্মীদের কী হবে– প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে, বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যারা এজেন্টের মাধ্যমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে, এমনকি যারা ভিসা পায়নি, তাদের ব্যাপারেও বিবেচনা করা হবে। তাদের কীভাবে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায়, সে ব্যাপারেও কাজ চলছে। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’