কক্সবাজারচট্টগ্রাম

ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, দায় নিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

কক্সবাজার শহরের বেসরকারি ইউনিয়ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় আফসানা হোসেন শীলা নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। তবে তার দায় কাঁধে নিতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই প্রসূতির স্বামীর নাম মুহাম্মদ ইফতেকার। তার বাড়ি মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ায়।

হাসপাতালের অবহেলা, দায়িত্বহীনতা ও ভুল চিকিৎসার কারণে স্ত্রী শীলার মৃত্যু হয়েছে দাবী করে স্বামী ইফতেকার জানান— তার স্ত্রীর ব্যথা শুরু হলে ২১ এপ্রিল ডাক্তার নীনা জাহানের কাছে নিয়ে যান। তিনি রোগীকে ইউনিয়ন হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার শাহেদ প্রসূতি শীলাকে ভর্তি করান এবং ইনজেকশন দেন। এরপর শীলার প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথ্য গোপন করেছে দাবী করে ইফতেকার আরো জানান— হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় ২২ এপ্রিল শীলাকে সিজার করাতে হবে, তার জন্য রক্ত যোগাড় করতে বলেন চিকিৎসক শাহেদ। ওইদিন রাত তিনটার দিকে ডাক্তার শাহেদ নার্স হিমু ও সোমাকে সঙ্গে করে তার স্ত্রী শীলাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান এবং তার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু শীলাকে অপারেশন করানোর সময় জরায়ু কেটে ফেলার বিষয়টি গোপন রাখেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য ডাক্তার শাহেদ, নার্স হিমু, সোমা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে ভুক্তভোগী ইফতেকার বলেন— আমার স্ত্রীর রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না বলে ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালে আমরা ডাক্তার নীনা জাহানকে অবগত করি। ওনার পরামর্শে আমার স্ত্রী শীলাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আইসিওতে ভর্তি রাখি। সেখানে ২৪ এপ্রিল রাতে শীলার মৃত্যু হয়।

আফসানা হোসেন শীলার পিতা মোহাম্মদ হোসেন বলেন— ইউনিয়ন হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আর কোন পিতা যেন তার মেয়েকে না হারায়, তার জন্য অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে।

তবে প্রসূতি শীলার মৃত্যুতে নিজেদের দায় নেই বলে দাবী ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এই ব্যাপারে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোসাব্বির হোসেন তামিম জানান— রোগীর স্বামীর অনুমতি নিয়েই অপারেশন করা হয়েছে। এখানে ডাক্তার-নার্সদের কোন গাফেলতি নাই।

এদিকে একটি সূত্র নিশ্চিত করেন— প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

সেই বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নুরুল হুদার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওনার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *