চট্টগ্রাম

ভোটে নেই, তবুও ফ্যাক্টর মেয়র আবু

আবুল কালাম আবু। ছিলেন বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র। তারও আগে ছিলেন পশ্চিম গোমদণ্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মেয়র ও চেয়ারম্যান হিসেবে ২০ বছর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের কাছে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।

২০২১ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনের পর রাজনীতি ও ভোটের মাঠ থেকে দূরে সরে যান সাবেক মেয়র আবুল কালাম আবু। তবে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত হাজির হতেন তিনি। মানুষও তাকে আপন মনে গ্রহণ করতো।

২০১৪ সালে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। দায়িত্ব পালন করেছিলেন সাত বছর। এর আগে ১৩ বছর ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ঋণখেলাপি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। উচ্চ আদালতে আপিল করেও মনোনয়ন ফিরে পাননি তিনি। শেষে মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জহুর।

দীর্ঘদিন ধরে ভোট ও রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে থাকলেও ভোট যেন তাকে পিছু ছাড়ছে না। নির্বাচনে না থেকেও এবার আলোচনায় রয়েছেন মেয়র আবু। তার ছোট ভাই পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম শফি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভাইয়ের পক্ষে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন মেয়র আবু ও তার অন্য ভাইয়েরা। মেয়র আবু মাঠে নামার পর আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন তিনি। কারণ সৎ ও কর্মনিষ্ঠা এবং উদার সেবাদানের কারণে মানুষের মধ্যে তার বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, আবুল কালাম আবু ২০ বছর ধরে মেয়র ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে জনসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। এলাকাবাসীর আপনজন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। দলমত ও ধর্ম-বর্ণ সব শ্রেণির মানুষের কাছে সমধিক কদর রয়েছে তার।

মনোনয়নপত্র জমাদানের পর থেকেই আবু তার ভাইয়ের পক্ষে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ঘনিষ্ঠ ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। ভোটের এসব কর্মকান্ড অনেকটা আড়ালে থাকলেও প্রতীক বরাদ্দের পর তিনি এখন প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন।

আওয়ামী লীগ ঘরানার দুই ইউপি চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভোটে না থাকলেও মেয়র আবু ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবেন। তার নিজস্ব একটা বলয় ও ভোটব্যাংক রয়েছে।’ গতকাল শুক্রবার সাবেক মেয়র আবুল কালাম আবুসহ পাঁচ ভাই আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নেমেছেন। আবু বলেন, ভাইয়ের পক্ষে পরিবারের সবাই আন্তরিকভাবে মাঠে নেমেছেন।

২০২১ সালে পৌর নির্বাচনে শফিউল আলমসহ তিন ভাই মেয়র পদপ্রার্থী ছিলেন। সেই থেকে ভাইদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। গতকাল পিতার করব জেয়ারত করে সেই মনোমালিন্যের অবসান ঘটিয়ে একাট্টা হয়েছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল আলম বলেন, আমার ভাইদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। সকলে যেন মিলেমিশে পরিবারের মতো এই সমাজ গড়তে পারি।

উল্লেখ্য, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী (মোটরসাইকেল), সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা (দোয়াত-কলম), পৌরসভা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম শফি (ঘোড়া), জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য মোহাম্মদ জাহেদুল হক (হেলিকপ্টার), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এসএম সেলিম (কাপ-পিরিচ), শ্রমিক লীগ নেতা এস এম নূরুল ইসলাম (টেলিফোন) ও প্রবাসী মোহাম্মদ শফিক (আনারস)। সাত প্রার্থীই আওয়ামী লীগের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *