ধর্ম

মহানবী সা. মেহমানকে বিদায় দিতেন যেভাবে

আতিথেয়তা ও মেহমানদারি ইবাদত। মেহমানদারি যদি আল্লাহর হুকুম ও রাসূল (সা.)-এর তরিকায় হয়, তাহলে পার্থিব ও পরকালীন দুই ধরনেই লাভ। মেহমানকে সম্মান জানানো, খুশি করা ও আনন্দিত করার পাশাপাশি বিপুল সওয়াবও লাভ হয়।

ইসলামের অন্যতম শিষ্টাচার হচ্ছে মেহমানকে তার যথাযথ সম্মান করা। এ ক্ষেত্রে মেজবানের যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু উজাড় করে মেহমানকে সম্মান করা।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানকে সম্মান করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১৩৬)

মেহমানকে সম্মান করার একটি দিক হচ্ছে, বিদায় দেওয়ার সময় তার সঙ্গে হেঁটে একটু পথ এগিয়ে দেওয়া। সে যদি কোনো বাহন নিয়ে আসে তাহলে বাহন পর্যন্ত উঠিয়ে দেওয়া। এর মাধ্যমে মেহমানের সম্মান বৃদ্ধি পায়। তার অন্তর  মেজবানের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে।সে আনন্দচিত্তে তার গন্তব্যে ফিরে যাবে।

অনেকেই আছে, যারা এই সুন্নত না জানার কারণে এর ওপর আমল করে না। সমাজের খুব সামান্য মানুষ এই শিষ্টাচারের প্রতি গুরুত্ব রাখে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বিদায়ের সময় মেহমানের সঙ্গে ঘরের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে যাওয়া সুন্নত। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৫৮)

নবীজি (সা.) তাঁর প্রিয় সাহাবিকে কিভাবে বিদায় দিয়েছেন, তার দৃশ্য এ হাদিসে ফুটে উঠেছে। আসেম বিন হুমাইদ সাকুনি থেকে বর্ণিত—

মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়েমেন পাঠানো সময় মহানবী (সা.) কিছু পথ এগিয়ে দিতে এবং অসিয়ত করতে তাঁর সঙ্গে বের হলেন। মুআজ (রা.) ছিলেন সওয়ারিতে, আর তিনি হেঁটে পথ চলছিলেন। অসিয়ত করে অবশেষে তিনি তাঁকে বললেন, ‘হে মুআজ! তুমি হয়তো আগামী বছর আমার দেখা পাবে না। সম্ভবত, তুমি আমার মসজিদ ও কবরের পাশ দিয়ে পার হবে!’ এ কথা শুনে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গহারা হতে হবে জেনে উদ্বিগ্ন হয়ে মুআজ কাঁদতে লাগলেন।

মুআজ (রা.) উঁচু আওয়াজে কাঁদতে লাগলেন, তখন নবী (সা.) তাঁকে বললেন, ‘কেঁদো না মুআজ! কারণ (এভাবে) কান্না হলো শয়তানের তরফ থেকে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২১০৭)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *