মাথা ও বুকে আঘাত করে বাবার মৃত্যু নিশ্চিত করেন ছেলে: পিবিআই
কুষ্টিয়া: পারিবারিক অশান্তির জেরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বৃদ্ধ খেজের আলীকে (৬৫) তার ছেলে আনোয়ার হোসেন হত্যা (৪৬) করেছেন। কোদাল দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাতের পর বুকের হাড় ভেঙে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তিনি।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) শহীদ আবু সরোয়ার।
পিবিআই জানায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের একটি ভুট্টা খেত থেকে খেজের আলীর (৬৫) ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পরদিন ৮ অক্টোবর নিহতের ভাই নাজির আলী দৌলতপুর থানায় একটি মামলা করেন। থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কোনো কুল কিনারা বের করতে না পারায় পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে তদন্তের জন্য মামলাটি পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে পিবিআই।
তদন্তে বেড়িয়ে আসে নিহত ব্যক্তির একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনারুল নৃশংসভাবে কোদালের আঘাতে বাবাকে হত্যা করে মরদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যায়। পরে আনোয়ারকে আটক করা হলে জিজ্ঞাসাবাদে বাবাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার জানায়, তিনি ছয় বছর সৌদি আরব ছিলেন। তারপর এক বছরের মতো মালয়েশিয়া থাকার পরে দেশে ফিরে আসেন। তার পরিবার থেকে আবারও বিদেশে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। পরে তার বাবা বিভিন্ন জায়গায় জমি বন্ধক ও বিক্রি করে প্লেন ভাড়ার জন্য ৬২ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা থেকে তিনি ৫ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেন। এ কারণে আনোয়ারের একমাত্র ছেলে শিশির (২০) তার বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এই নিয়ে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এতে বাবা খেজের আলীসহ পরিবারের কেউ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতিহিংসা থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পরে আনোয়ারের দেওয়া তথ্য মতে হত্যায় ব্যবহৃত কোদাল জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ঘাতক আনোয়ার হোসেন স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে জানিয়েছেন। পরে তাকে আদালতে পাটানো হয় বলে জানায় পিবিআই।