জাতীয়

মিয়ানমারের রাখাইনে তুমুল সংঘর্ষ, পালাচ্ছে হাজারো মানুষ

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘর্ষ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিটি-আইআইএমএম এক বিবৃতিতে জানায়, সংস্থাটি রাখাইনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুরুত্ব সহকারে অনুসরণ এবং সেখানে মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করছে।

এদিকে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি বলছে, তারা রাখাইনের জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর অধিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করছে। রাখাইনে বর্তমানে নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ছয় লাখ সদস্য রয়েছে।

এক স্থানীয় বাসিন্দা মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীকে বলেন, সবাই এখন চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য শিশু এবং বয়স্ক লোকদের গ্রামীণ এলাকার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আরাকান আর্মির মাতৃ সংগঠন ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান (ইউএলএ) সোমবার বুথিডাং, মংডু এবং থান্ডওয়ে টাউনশিপে কর্মরত বেসামরিক নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য জারি করা এক বিবৃতিতে বলছে, এসব অঞ্চলে জান্তা সরকারের সাথে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই চলছে। বেসামরিক নাগরিকদের এসব এলাকা থেকে সরে যেতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সহিংসতা বাড়তে থাকায় রাখাইন রাজ্যের থান্ডওয়ে কেন্দ্রীয় বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। থান্ডওয়ের উত্তরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চলছে।

এর আগে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারের পার্লামেন্টারি নির্বাচনে অং সান সুচির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ৪১২ আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয় পায়। কিন্তু অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

এরপর ২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে তাদের নিপীড়ন-নির্যাতন ও হামলায় অন্তত সাড়ে চার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বন্দী করা হয়েছে ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে। জান্তা বাহিনীর নৃশংস হামলায় মিয়ানমার জুড়ে অন্তত ৮০ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মিসহ দেশটির একাধিক গণতন্ত্রপন্থি সংগঠন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *