মিরাজ–চমক দিতে পারেন নির্বাচকেরা
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে কারা থাকবেন? প্রশ্নটা কয়েক দিন আগে করলেও কমবেশি সবাই সম্ভাব্য ১৫ জন ক্রিকেটারের নাম বলে দিতে পারতেন। এখনো হয়তো সেটা সম্ভব। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময় পেসার তাসকিন আহমেদ শরীরের ডান পাশে চোট পাওয়ায় কিছু হিসাব উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঠিক করতে এখন আইসিসি নির্ধারিত সর্বশেষ সময় ২৪ মে পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হবে।
তবে গাজী আশরাফ হোসেনের নির্বাচক কমিটি বিশ্বকাপের আগে হিউস্টনে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতিমূলক সিরিজের দল ঘোষণা করবে আজ দুপুরে। সেই দল হতে পারে ১৭ বা ১৮ জনের। বিশ্বকাপের জন্য শেষ পর্যন্ত এখান থেকেই বেছে নেওয়া হবে ১৫ ক্রিকেটারকে।
সুখবর হলো, যুক্তরাষ্ট্র সিরিজে খেলতে না পারলেও বিশ্বকাপ সামনে রেখে আজ ঘোষিতব্য দলে থাকছেন তাসকিন। তবে তাসকিনের থাকাটাও কোনো চমক নয়। যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের দলে চমক যদি কেউ হন, সেটা হতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে চট্টগ্রামের প্রস্তুতি ক্যাম্পের জন্য নির্বাচকদের দেওয়া ১৭ জনের (সাকিব ও মোস্তাফিজ ছাড়া) তালিকায় ছিলেন না এই অলরাউন্ডার। তবে প্রধান নির্বাচক তখনো আভাস দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে মিরাজকেও রাখা হতে পারে বিশ্বকাপের তাঁবুতে। সেটিই হচ্ছে কি না, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৪ মে পর্যন্ত।
তবে আপাতত এটুকু জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ১৭-১৮ জনের দলে মিরাজের থাকার প্রবল সম্ভাবনা আছে। অবশ্য চট্টগ্রামের ক্যাম্পের তালিকা এবং সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজের দল থেকে একমাত্র ওপেনার পারভেজ হোসেনের না থাকাটাই নিশ্চিত আগামীকাল রাতে যুক্তরাষ্ট্রগামী দলে। বাকি ১৮ জনের মধ্যে যাওয়ার সম্ভাবনা কম আফিফ হোসেনেরও। মিরাজ এলে আসবেন ১৯ জনের বাইরে থেকে।
দল চূড়ান্ত করার আগে কাল সন্ধ্যায় একসঙ্গে বসেছিলেন তিন নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক ও হান্নান সরকার। পরে গভীর রাতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান জালাল ইউনুস এবং কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে আরেকটি ভার্চ্যুয়াল সভা করেছেন তাঁরা। সেখানেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা ১৭ বা ১৮ জনের দল।
চোটে পড়া তাসকিনের বদলি হিসেবে ভাবনায় আছেন হাসান মাহমুদ। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে হাসানের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রামের তিন দিনের বিশেষ প্রস্তুতি ক্যাম্পে না থাকা মিরাজ সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন গত জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে।
বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারের একমাত্র ডানহাতি লিটন দাসের ফর্মহীনতাই হয়তো হুট করে আরেক ডানহাতি মিরাজকে বিবেচনার কারণ হতে পারে। মিরাজের জন্য অবশ্য এটি নতুন অভিজ্ঞতা নয়। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেও একই বিপর্যয়ের সমাধান হিসেবে মিরাজের ডাক পড়ে, গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগেও তিনি ওপেন করেছেন।
মিরাজ শেষ পর্যন্ত দলে এলে অফ স্পিন বোলিংয়ের চেয়ে তাঁর ব্যাটিংটাই বেশি গুরুত্ব পাবে। সাকিব আল হাসান ছাড়াও স্পিন বিভাগে শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেনের সঙ্গে তানভীর ইসলামের থাকার সম্ভাবনা আছে। পেস বোলিংয়ে তাসকিন ও হাসান তো আছেনই; শরীফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসানেরও যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া একরকম চূড়ান্ত। তাসকিন চোটে পড়ায় বাড়তি বিকল্প হিসেবে এখন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও হয়তো থেকে যাবেন ১৭-১৮ জনের দলে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিলেও যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। সাইফউদ্দিনের গতি ও বোলিংয়ের ধরন বিশ্বকাপে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে টিম ম্যানেজমেন্টের। তারপরও তাসকিনের চোট দলে রাখতে পারে তাঁকেও।
ওপেনিংয়ে লিটন দাস, সৌম্য সরকারের মধ্যে তানজিদ হাসানের জায়গা করে নেওয়া নিশ্চিত। বর্তমান ফর্মের ভিত্তিতে মিডল অর্ডারে তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলীর সঙ্গে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও জায়গা পাকা করেছেন। সব ঠিক থাকলে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আবারও ২০ ওভারের বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহকে দেখা যাবে।