আইন-আদালতজাতীয়

মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত হয়নি

সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়নি। তবে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ‘নট টু ডে’ (আজ শুনানি নয়) আদেশ দেন। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মো. জহিরুল ইসলাম।

অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মো. জহিরুল ইসলাম এক দিনের (নট টুডে) সময়ের প্রার্থনা জানান। তিনি বলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী দেশের বাইরে রয়েছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আগে কোটা ছিল। ২০১৮ সালে কোটাপদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করা হয়। এটি বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

তখন আদালত বলেন, ‘চেম্বার আদালত কি আদেশ দিয়েছিলেন’ এ সময় মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন। আদালত বলেন, নট টুডে (আজ নয়)। আপনারা সিপি (লিভ টু আপিল) ফাইল করেন। আমরা এখন ইন্টারফেয়ার (হস্তক্ষেপ) করব না।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রায়টা (হাইকোর্টের) পাইনি। আদালত বলেন, পাবেন। একপর্যায়ে আদালত বলেন, এত আন্দোলন কিসের, রাস্তায় শুরু হয়েছে আন্দোলনের চাপ দিয়ে কি হাইকোর্টের রায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না, না।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান।

পরে রাষ্ট্রপক্ষ রায়টি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত গত ৯ জুন এ আবেদনটি শুনানির জন্য ৪ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।

নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এমন পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী জানান, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করেছিল। এটা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই।

এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *