আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে সহজ জয়ের আশা টিউলিপ সিদ্দিকের

যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিবারই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। এবার সে সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকেছে ৩৪ জনে। তবে তাদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষ সারিতে রয়েছেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র টিউলিপ সিদ্দিক। অবস্থান সুসংহত হওয়ায় এবারও বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে তার সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জরিপ বলছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি বড় জয় পেতে চলেছে। এ হিসাবেও দলটির মনোনীত প্রার্থী টিউলিপের জয় নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কমিউনিটি।

এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আটজন ব্রিটিশ নাগরিক লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। বর্তমানে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং আবার মনোনয়ন পেয়েছেন—এমন চারজনের একজন হলেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট থেকে লড়ছেন।

টিউলিপ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার জ্যেষ্ঠ মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি। তিনি ১৯৮২ সালে লন্ডনের মিচামে সেন্ট হেলিয়ার হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ছিল বৈচিত্র্যময়। শৈশবে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে থেকেছেন। পরে কিশোর বয়সে লন্ডনে স্থিত হন এবং সেখানেই পড়াশোনা করেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিকস, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান টিউলিপ প্রাথমিক জীবনেই বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে যুক্ত হন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হয়ে সাংগঠনিক রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তার নেতৃত্বগুণ দলকে মুগ্ধ করে। অল্প সময়ে তিনি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের প্রভাবশালী নেত্রীতে পরিণত হন।

এম‌পি নির্বা‌চিত হওয়ার আগে তিনি ক্যাম‌ডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ‌তি‌নিই ছিলেন ক্যাম‌ডেন কাউন্সিলের প্রথম বাংলা‌দেশি বংশোদ্ভূত নারী কাউন্সিলর।

২০১৫ সালে তিনি শক্তিশালী সাত প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন। এরপর থেকে ২০২৪ সালে পার্লামেন্টে বিলুপ্তের আগ পর্যন্ত তিনি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন।

এবারের নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- রিফর্ম ইউকে থেকে ক্যাথরিন বেকার, রিজয়েন ইইউ থেকে ক্রিস্টি এলান-কেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে স্কট এমেরি, জোনাথন লুই লিভিংস্টোন (স্বতন্ত্র), গ্রিন পার্টি থেকে লরনা জেন রাসেল, কনজারভেটিভ অ্যান্ড ইউনিয়নিস্ট পার্টি থেকে ডন উইলিয়ামস। তবে নির্বাচনী প্রচারে এসব প্রার্থীর তুলনায় টিউলিপ ভোটারদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন।

দেড় মাসের নির্বাচনী প্রচার শেষে আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। বড় কোনো অঘটন না ঘটলে ১৫ বছর পর যুক্তরাজ্যে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। দলটি ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কেউ। সে আলোচনায় ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের আলোচনায় টিউলিপের নামটি বারবার উচ্চারিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *