আন্তর্জাতিক

যেভাবে তরুণ আইনজীবী থেকে প্রেসিডেন্ট হলেন রইসি

‘কট্টরপন্থি’, ‘তেহরানের কসাই’ হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বে পরিচিত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। তার আমলেই হয়েছে অনেক আন্দোলন। হিজাব ইস্যু, মধ্যপ্রাচ্য-লেবানন, ইসরায়েল ইস্যুতে ভূমিকা ছিল তার ভূমিকা। কিন্তু কীভাবে এই নেতার উত্থান হলো?

এই দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু ইরানের জন্য বিরাট এক ধাক্কা। দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক চলে আসছে ইরানের। ইব্রাহিম রাইসি ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় প্রতিবেশীদের পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছিলেন তিনি।

ইরানের আইন, সংবিধান এবং ধর্মীয় বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম রইসির পেশাদার জীবন শুরুই হয় প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে, তাও মাত্র ২০ বছর বয়সে। কারাজ শহরের কৌশুলি হিসেবে ওই দায়িত্ব পান তিনি। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত রইসি তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

মূলত তখন থেকেই ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি পান রাইসি। পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি সর্বোচ্চ ধর্মী নেতা নির্বাচনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এই সভা।

২০২১ সালে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন করে ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইব্রাহিম রাইসি। দুর্নীতি, অদক্ষতা ও অভিজাতদের ঘোর বিরোধী হিসেবে প্রকাশ করা রইসি রাজনৈতিক দিক থেকে শিয়া ইসলামি কট্টরপন্থার সমর্থক।

তবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ঘরে-বাইরে নানামুখি চাপের মধ্যে পড়েন ইব্রাহিম রইসি। নতুন করে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আসতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে। ফলে চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেশটিতে বিক্ষোভ হয় দফায় দফায়।

২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পোশাকের স্বাধীনতা ইস্যুতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়। যাতে প্রাণ যায় সাড়ে ৫শ’র বেশি মানুষের। ওই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে পড়েন রইসি। যদিও পরে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়্ন্ত্রণে আনেন তিনি।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার পেছনে রইসি প্রশাসনের ভূমিকাকেই দায়ী করে আসছে তেল আবিব। ইরান-ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ পরিস্থিতিও কৌশলী হাতে সামলেছেন রইসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *