যে সময় আসার আগেই আমল শুরু করতে বলেছেন রাসূল সা.
আমল, ইবাদতের মাধ্যমে জীবন গড়ার ইচ্ছা থাকে সবার। আমলের প্রতি আগ্রহী হলেও অনেক সময় আমল শুরু করা হয় না। সামনে কখনো আমল করবো। এইতো আগামীকাল থেকে, এই ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়েই পুরোদমে ইবাদতে মগ্ন হবো— এমন কথা বলতে শোনা যায় অনেককে।
এভাবে সুসময়ের অপেক্ষায় আমলে বিলম্ব করা অনুচিত। কারণ, ক্ষণস্থায়ী জীবনের কোনো ভরসা নেই। শুরু করবো করবো করে যে আমল শুরু করিনি, হয়তো তার সুযোগ আসার আগেই খালি হাতে রবের দরবারে ফিরে যেতে হবে, তখন আমলের শূন্য ভাণ্ডার আর আফসোস ছাড়া আর কিছুই থাকবে।
এছাড়াও আমলের আমলের প্রতি উদাসীনতার কারণে এমনও হতে পারে যে, যাচ্ছেতাই জীবনাচারে অভ্যস্ততার কারণে আর কখনো হয়তো ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি নাও হতে পারে। এমন আশঙ্কার কথা ভেবেই আল্লাহর রাসূল সা. যতদ্রুত সম্ভব নেক আমল করতে বলেছেন। এক হাদিসে তিনি বলেন—
‘অন্ধকার রাতের মতো ফিতনা আসার আগে তোমরা নেক আমলের দিকে ধাবিত হও। (কেননা এমন একসময় আসবে) যে সময় সকালে একজন মুমিন হলে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বিন বিক্রি করে দেবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৯৫)
অন্য হাদিসে এসেছে, মহানবী সা. ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে অন্ধকার রাতের টুকরার মতো চরম ফিতনা আসতে থাকবে। ওই সময় সকালবেলা যে ব্যক্তি মুমিন থাকবে সে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে এবং সন্ধ্যায় যে ব্যক্তি মুমিন থাকবে সে সকালবেলা কাফির হয়ে যাবে। এ সময় উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হবে, দণ্ডায়মান ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হবে এবং চলমান ব্যক্তি দ্রুত ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হবে।
এ সময় তোমরা তোমাদের ধনুক ভেঙে ফেল, ধনুকের ছিলা কেটে ফেল এবং তোমাদের তরবারিগুলো পাথরের ওপর আঘাত করে ভেঙে ফেল। তোমাদের কারো ঘরে বিপর্যয় ঢুকে পড়লে সে যেন আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের মধ্যে উত্তম জনের (হাবিল) মতো হয়ে যায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৫১)
একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) চাদর মুড়ি দিয়ে লোকদের সামনে বের হয়ে বললেন, ‘হে লোক সকল! অন্ধকার রাতের টুকরার মতো ফিতনা তোমাদের আচ্ছাদিত করবে। হে লোক সকল! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে অধিকহারে কাঁদতে ও অল্প হাসতে।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৪৫৬৪)