জাতীয়

রাজধানীতে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ

ঢাকার শিশু হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলা দুই বছরের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। শিশুটির রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে নেমে এসেছিল। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টেও সেটি স্পষ্ট। কিন্তু সেই রিপোর্ট দেখার সময় হয়নি কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের। ফলাফল শিশুটির অকাল মৃত্যু।

গেলো শুক্রবারের এই ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

১৬ মে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ঝিনাইদহ থেকে দুই বছরের শিশু রিফাতকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। শিশুটির রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। ঝিনাইদহের স্থানীয় হাসপাতাল থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

শিশু হাসপাতালের বি ব্লকের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে তাকে ভর্তি নেয়া হয়। রাত ৯টায় দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. তানিয়ার পরামর্শে তার রক্তসহ কিছু জরুরি পরীক্ষা করা হয়।

রাত ১২টায় পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের সাথে কথা বলেন শিশুটির বাবা। পরীক্ষায় শিশুটির রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা আসে ৩। কিন্তু রিপোর্টটি আমলে নিয়ে চিকিৎসার কোনো উদ্যোগ নেননি দায়িত্বরত চিকিৎসক। উল্টো ধমক দিয়ে বলা হয়, সব ঠিক আছে।

শিশুটির বাবা মো. ইকরামুল ইসলাম বলেন, রক্তে হিমোগ্লোবিন কম ছিলো। সেই রিপোর্ট আমি দেখাই। দেখানোর পর তারা আবার পরীক্ষা করতে বলে। কিন্তু পরে আর রিপোর্ট দেখে না।

রক্তে মাত্র ৩ ভাগ হিমোগ্লোবিন নিয়ে ২০ ঘণ্টা কেটে যায়। এ সময় বাবা-মার চোখের সামনেই শিশুটির শরীর ফ্যাকাশে হতে থাকে।

বৃহস্পতিবার পেরিয়ে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আবারও শিশুটির চিকিৎসার তাগিদ দিলে, স্বজনদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান দায়িত্বরত চিকিৎসক।

এ সময় রক্তের রিপোর্ট দেখে নিজেই হতবাক হয়ে যান ওই চিকিৎসক। কিন্তু দায় দেন, স্বজনদের কারণেই রক্ত দেয়া যায়নি। সন্ধ্যা ৬টায় শিশুটিকে রক্ত দেয়ার প্রস্তুতি নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। মৃত্যুর কারণ হিসেবেও সেই চিকিৎসকরা হার্টে রক্ত স্বল্পতা ও রক্তে ইনফেকশন বিষয়টি স্বীকার করেন।

শিশুটির বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে যখন মারা যাচ্ছে। তখন ডাকার পরও ডাক্তার আসেননি।

শুক্রবার রাতে শিশুটির মরদেহ নিয়ে ঝিনাইদহে ফিরে যান হতভাগ্য স্বজনরা। এ বিষয়ে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের কেউ কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *