রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে–অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল দিল্লি
জিতলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ওঠার পাশাপাশি সবার আগে আইপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত হতো রাজস্থান রয়্যালসের। বিপরীতে প্লে-অফের স্বপ্ন সুদৃঢ় রাখতে জয়ের বিকল্প ছিল না দিল্লি ক্যাপিটালসের। এই ম্যাচে হার মানে কেবল কাগজে-কলমেই টিকে থাকত দিল্লির প্লে-অফ সম্ভাবনা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রাজস্থানকে ২০ রানে হারিয়ে আইপিএলের প্লে অফ খেলার আশা ভালোভাবেই বাঁচিয়ে রাখল দিল্লি। এখন পরের ম্যাচগুলোতেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখলে প্লে–অফের টিকিট পেয়ে যাবে দিল্লি।
ঘরের মাঠ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে জেইক ফ্রেজার-ম্যাগার্ক ও অভিষেক পোরেলের ফিফটিতে ৮ উইকেটে ২২১ রান সংগ্রহ করে দিল্লি। জবাবে সঞ্জু স্যামসনের ৪৬ বলে লড়াকু ৮৬ রানের পরও রাজস্থান থেমেছে ৮ উইকেটে ২০১ রানে।
বড় সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় বলেই ধাক্কা খায় রাজস্থান রয়্যালস। ৪ রান করে ফিরে যান যশস্বী জয়সোয়াল। শুরুতে উইকেট হারালেও রাজস্থানকে লক্ষ্যচ্যুত হতে দেননি সঞ্জু স্যামসন। জস বাটলারকে সঙ্গে নিয়ে ৫ ওভারেই দলকে ৫৭ রান এনে পৌঁছে দেন সঞ্জু। ১৭ বলে ১৯ রান করে বাটলার ফিরে গেলে ভাঙে এ জুটি। এরপর রিয়ান পরাগকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন সঞ্জু। ১০ ওভার শেষে দলকে এনে দেন ৯৩ রান।
২২ বলে ২৭ রান করে রিয়ান ফিরে গেলেও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক। শুবম দুবেকে নিয়ে চেষ্টা করেন দলকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যাওয়ার। ১৫ ওভারে রাজস্থান পৌঁছে যায় ১৫৯ রানে। ৩০ বলে তখন রাজস্থানের প্রয়োজন ছিল ৬৩ রান। তবে পরের ওভারেই সঞ্জুকে ফিরিয়ে রাজস্থানকে বড় ধাক্কা দেন মুকেশ কুমার।
এই উইকেটে অবশ্য বড় কৃতিত্ব দিতে হবে শাই হোপকে। লং অনে বাউন্ডারি লাইনের কাছাকাছি জায়গায় দুর্দান্ত এক নেন হোপ। ফেরার আগে ৪৬ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ৮৬ রান করেন সঞ্জু। অধিনায়ককে হারানোর পরের ওভারে রানে গতি বাড়াতে গিয়ে ফিরে যান শুবমও। ১২ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৫ রান করেন তিনি। এরপর দ্রুত ডোনোভান ফেরেইরার উইকেটও হারালে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে পড়ে রাজস্থান। শেষ ১৬ বলে রাজস্থানের প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। কিন্তু এই সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি রাজস্থান। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানেই থেমে যায় তারা।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন দিল্লির দুই ওপেনার ফ্রেজার-ম্যাগার্ক ও পোরেল। ৪ ওভার শেষেই দলকে ৫৯ রান এনে দেন এ দুজন। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়া ফ্রেজার-ম্যাগার্ক একাই করেন ৫০ রান। ১৯ বলেই ফিফটি করা এ ওপেনার আবেশ খানের এক ওভারেই নেন ২৮ রান। পরের ওভারেই অবশ্য ম্যাগার্ককে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রবীচন্দন অশ্বিন। ২০ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৫০ রান করেন অস্ট্রেলিয়ান এ ওপেনার।
এরপর দ্রুত রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন হোপ (১)। পরপর দুই উইকেট হারানো দিল্লিকে টেনে নেন অভিষেক। এর মধ্যে অভিষেককে অল্প সময় সঙ্গ দিয়ে ফেরেন অক্ষর প্যাটেল (১৫)। দলীয় ১৪৪ রানে ফেরেন অভিষেকও। ৩৬ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৬৫ রান। শেষ দিকে ২০ বলে ঝোড়ো ৪১ রান করেন ট্রিস্টান স্টাবস। আর গুলবাদিন নাইব করেন ১৫ বলে ১৯ রান। দিল্লি শেষ পর্যন্ত থামে ৮ উইকেটে ২২১ রানে। দিল্লির এই সংগ্রহ শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও টপকে যেতে পারেনি রাজস্থান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ২২১/৮
(অভিষেক ৬৫, ফ্রেজার-ম্যাগার্ক ৫০, স্টাবস ৪১, নাইব ১৯; অশ্বিন ৩/২৪, সন্দ্বীপ ১/৪২, বোল্ট ১/৪৮, চাহাল ১/৪৮)
রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ২০১/৮
(সঞ্জু ৮৬, রিয়ান ২৭, শুবম ২৫; কুলদীপ ২/২৫, মুকেশ ২/৩০, খলিল ২/৪৭)
ফল: দিল্লি ক্যাপিটালস ২০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কুলদীপ যাদব (দিল্লি ক্যাপিটালস)।