রাত হলেই বন্যহাতির তাণ্ডব, নিয়েও যাচ্ছে বস্তাভর্তি ধান
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার পাহাড়ি এলাকায় রাত হলেই বন্যহাতি ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছে। প্রায় প্রতি রাতেই বন্যহাতি খেয়ে যাচ্ছে গোলার ধান। শুধু তাই নয়, বস্তাভর্তি ধান সাথে করে নিয়েও যাচ্ছে হাতির দল। এমনকি বসত ঘর ভেঙ্গে তছনছ করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।এ অবস্থায় আগুন জ্বালিয়ে ও পটকা ফুটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। তবে এসব উদ্যোগ তেমন ফলপ্রসূ না হওয়ায় আবারও তাণ্ডবের আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় বন বিভাগ বলছে, হাতির জায়গায় মানুষের রাজত্ব চলছে। ফলে হাতি এখন মানুষের জায়গায় চলে আসছে। মূলত খাবার ও নিরাপদ আবাসযোগ্য স্থান সংকটের কারণে হাতি বন ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে উপজেলার মাদার্শা ও এওচিয়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সাতকানিয়ার মাদার্শা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শাহনগর পশ্চিম সিকদার বাড়ির মো. মাহমুদুর রহমান চৌধুরীর বাড়িতে ৬-৭টি হাতির দল হানা দেয়। এসময় বন্যহাতির দল গোলা ভেঙ্গে ধান খেয়ে চলে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মো. মাহমুদুর রহমান চৌধুরী জানান, ঘটনার দিন সাড়ে ১১ টার দিকে বন্যহাতির দল বাড়ির কাছে আসে। পরে হাতিগুলো ধানের গোলা ভাঙে। এরপর ইচ্ছেমত ধান খেয়ে চলে যায়। তিনি আরও জানান, বন্যহাতির দল আমার প্রায় আড়াই শত আড়ি ধান খেয়ে তছনছ করে ফেলেছে।
এছাড়া আগের দিন রাতে এওচিয়ার ৩নং ওয়ার্ডের পাহাড়তলী আলীনগরের তলী পাহাড়ে রফিকুল ইসলাম প্রকাশ বদিউল আলমের বাড়িতেও হানা দেয় বন্যহাতির দল।
এ বিষয়ে এওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু ছালেহ জানান, গত এক মাস ধরে প্রতিরাতেই লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্যহাতির দল। এতদিন বাগানের কাঁঠাল ও খেতের সবজি খেয়েছে। এখন গোলার ধান খাওয়া শুরু করেছে। খেয়ে যাওয়ার সময় আবার ধানের বস্তা নিয়েও যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন মাদার্শা রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুন মিয়া জানান, বাগানের কাঁঠাল, খেতের সবজি, গোলার ধান খেয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা নিয়ম অনুযায়ী বন বিভাগের কাছে আবেদন করলে তারা ক্ষতিপূরণ পাবেন। ইতিপূর্বে যারা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস জানান, বন্যহাতির দল লোকালয়ে হানা দেয়ায় মানুষ আতংকের মধ্যে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি মাদার্শা রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে কথা বলবো।