আন্তর্জাতিক

রাফা ও জাবালিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে হামাস-ইসরায়েল তুমুল লড়াই

গত অক্টোবরে গাজা থেকে চালানো রক্তক্ষয়ী হামলায় হতবিহ্বল ইসরায়েল প্রতিশোধ নিতে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে আসছে। আকাশপথের পাশাপাশি স্থলপথেও আক্রমণ চালাচ্ছে দখলদার দেশটি।

গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করার পর কয়েকদিন ধরে উত্তর গাজার জাবালিয়া এবং দক্ষিণ রাফার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টায় ইসরায়েল। এ নিয়ে গাজার শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর তুমুল যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে হামাস এবং ইসরায়েলের সেনাবাহিনী উভয় পক্ষই তাদের শত্রুদের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির দাবি করেছে। খবর আল জাজিরার।

হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের যোদ্ধারা জাবালিয়া ও রাফায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও হামাস দুই পক্ষই জানিয়েছে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের সরাসরি যুদ্ধ হয়েছে।

রাফার বাসিন্দারা বলেন, গত কয়েকদিন রাফার পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে গাজার হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপক লড়াই চলছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় টানা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। হামলার পাশাপাশি তেল আবিব গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করেছে, ভূখণ্ডের জনসংখ্যা, বিশেষ করে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ফেলেছে।

ইসরায়েলি যুদ্ধের আট মাসে গাজার বিস্তীর্ণ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধের ফলে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ বাসিন্দাই অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছেন।

আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো হামলায় মারা যাওয়া ফিলিস্তিনের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে।

যুদ্ধ শুরুর পর গাজার বাসিন্দারা রাফাহ অঞ্চলে আশ্রয় নিলেও সেখানে হামাসের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি আছে দাবি করে অভিযান জোরদার করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে রাফায় আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ৪ লাখ ফিলিস্তিনি সেখান থেকে সরে গেছেন।

শুধু রাফাতেই নয়, উত্তর গাজার জাবালিয়াতেও দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হচ্ছে। এর ফলে জাবালিয়া থেকেও দলে দলে ফিলিস্তিনি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পথে পথে ঘুরছে। কেউ হাঁটছে নিরুদ্দেশ আর কারও কারও কপালে জুটেছে ঠেলাগাড়ি।

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সন্তানদের নিয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকা আরেক নারী জানান, আমাদের পরিস্থিতি এতোই খারাপ যা বলে বোঝানো সম্ভব না। যাওয়ার থাকার কোন জায়গাই নেই বেশিরভাগ গাজাবাসীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *