রাসেল ভাইপার অন্য বিষধর সাপের চেয়ে কম আতঙ্কের!
রাসেলস ভাইপার মোটেও দেশের সবচেয়ে বিষধর কিংবা প্রাণঘাতী সাপ নয়। সময় মতো চিকিৎসা নিলে এই সাপের কামড়ে মৃত্যু ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে। অনেকে না জেনেও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এতে আতঙ্কের কোন কারণই নেই।
সম্প্রতি দেশে রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। বিষধর এ সাপটির দংশনে মানিকগঞ্জ ও ভোলাসহ বিভিন্ন জেলায় এ পর্যন্ত ১০ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরপর আতঙ্কিত হয়ে সাপটিকে নিয়ে বিভিন্ন মিথ ছড়ানো হচ্ছে। দেশে পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এলাকায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুর্লভ এই সাপ মেরে ফেলার প্রচারণাও চালানো হচ্ছে ফেসবুকে।
এদিকে রাসেলস ভাইপার নিয়ে যেভাবে আতঙ্কের কথা বলা হচ্ছে সেটি নিতান্তই ভয় থেকে এবং এটি অতিরঞ্জিত বলে জানান সাপ গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা।
গবেষকরা বলছেন, রাসেলস ভাইপার মোটেও দেশের সবচেয়ে বিষধর কিংবা প্রাণঘাতী সাপ নয়। বরং দেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ে যত লোক মারা যায় তার অর্ধেকই মারা যায় পাতি কেউটে বা গোখরা সাপের কামড়ে। রাসেল ভাইপার কামড় দিলেই রোগী মারা যায় এটিও সত্য নয়, ন্যূনতম ৭২ ঘণ্টার আগে সহজে রোগী মারা যায় না। বাংলাদেশে এ সাপের কামড়ের পর ১৫ দিন পর্যন্ত বেঁচে ছিল এমন তথ্যও আছে।
তারা বলছেন, সময় মতো চিকিৎসা নিলে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যু ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘অনেকে না জেনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সাপ দেখে সবাই ভয় পায় এবং এর কামড়ে মারা যায় এটাই মনে গেঁথে গেছে। চিকিৎসা নিলে যে ভালো হয় সেটা সবাই জানে না বলেই আতঙ্ক হয়। খুব দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেই সমাধান অনেকটা এগিয়ে নেয়া যায়। এছাড়া রাসেল ভাইপার তেড়ে এসে কামড়ায় বলে যে প্রচার চলছে সেটিও সঠিক নয়।
রাসেল ভাইপার কামড় দিলে জায়গাটা সাথে সাথে ফুলে যায় এবং সাপটি সাথে সাথেই চলে যায় না। সেজন্য কামড় দেয়ার পর সাপটা দেখা যায় বলে রোগী বা অন্যরা নিশ্চিত হতে পারে। একজন চিকিৎসক দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে পারেন। সেটি হলে ঝুঁকিও কমে যায়। এ কারণেও এটি অন্য বিষধর সাপের চেয়ে কম আতঙ্কের। তাই অপ্রয়োজনীয় আতঙ্কের কোন কারণই নেই। তবে সতর্ক অবশ্যই থাকতে হবে। তাছাড়া দূর্লভ সাপটি সম্পর্কে না জেনে অতিরঞ্জিত কথন চালু করে হত্যার ন্যায্যতা দেয়া হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।