রোহিঙ্গা হেড মাঝি হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাবেক হেড মাঝি আতাউল্লাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার অন্যতম আসামি আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজার সদরের দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আহসান উল্লাহ ১৯ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক এ/৮ এর কাদের হোসেনের ছেলে। নিহত সাবেক হেড মাঝি আতাউল্লাহ একই ক্যাম্পের এ/১ ব্লকের বাসিন্দা এবং ওই ব্লকের সাব মাঝি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ২৫ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে পালংখালীর ঘোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯ এ আতাউল্লাহ নামে একজনকে আরসার সদস্যরা নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় আতাউল্লাহর ছেলে বাদী হয়ে আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মামলা দায়েরের ৪৬ ঘণ্টার মধ্যে আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আহসান উল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বছর খানেক আগে আতাউল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে সোনা মিয়া নামক এক রোহিঙ্গাকে ক্যাম্প-১৯ এর এ ব্লকের হেড মাঝি এবং আতাউল্লাহকে ব্লক-এ/১ এর সাব মাঝি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তী হেড মাঝি সোনা মিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি গোলাগুলির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বর্তমানে কারাবরণ করছে। হেড মাঝি সোনা মিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর ক্যাম্প-১৯, ব্লক-এ এর হেড মাঝি হওয়ার জন্য আতাউল্লাহসহ আরো অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে। এ নিয়ে আতাউল্লাহ’র সাথে কয়েকজনের শত্রুতা তৈরি হয়, যারা আরসার সাথে একটি সু-সম্পর্ক রক্ষা করে চলছে। তাছাড়া গত দুই মাসে এপিবিএন পুলিশ কর্তৃক আরসার দুইজন অন্যতম সন্ত্রাসী হাতকাটা ফয়সাল এবং খাইরুল আমিন গ্রেপ্তার হওয়ায় আরসা সদস্যরা সন্দেহ পোষণ করছিল যে, আতাউল্লাহ এপিবিএন পুলিশকে আরসা সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করছে এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতে এই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই কারণে আতাউল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বীরা আরসার সাথে যোগসাজশে তাকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রেপ্তার আহসান উল্লাহ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আতাউল্লাহকে ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গা সদস্যের সাথে আলোচনা করার জন্য পান-সিগারেটের দোকানের সামনে আসতে বলে। আতাউল্লাহ দোকানের সামনে পৌঁছা মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ৮/৯ জন আরসার সদস্য রামদা ও ছোরা দিয়ে আতাউল্লাহকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।