চট্টগ্রাম

লতিফের ‘রেকর্ড’ নাকি সুমনের ‘বাজিমাত’

দেশের অর্থনীতির ‘হৃদপিণ্ড’ খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস, শিপিং কর্পোরেশন, তেল শোধনাগার, বিমান ও নৌবাহিনীর ঘাঁটি, বিমান বন্দর, ইপিজেড, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, ব্যাংক-বীমা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধানকেন্দ্র চট্টগ্রাম-১১ আসন। মূলত এসব অর্থনৈতিক স্থাপনাকে কেন্দ্র করেই চট্টগ্রামকে বন্দরনগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়। যে কারণে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-১১ আসনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেন সবাই।

জাতীয় রাজনীতিতেও এ আসন গুরুত্ব বহন করে। তাই বিগত নির্বাচনগুলোতে দেশের বড় দুই দল- আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীই দিয়েছে এ আসনে। এবার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তাদের কোনো প্রার্থীই নেই নির্বাচনে। তবে ভোটের মাঠে এ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য এমএ লতিফের জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।

এ দুজন ছাড়া চট্টগ্রাম-১১ আসনে আরও পাঁচজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের এবিএম জয়নুল আবেদীন, গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত, এনপিপির নারায়ন রক্ষিত এবং বিএসপির মহি উদ্দিন। তবে লতিফ-সুমনের চেয়ে প্রচার-প্রচারণায় তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন এসব প্রার্থী।

পতেঙ্গা এলাকায় কথা হয় খুচরা ব্যবসায়ী আফজাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে হলেও এখনও চট্টগ্রাম-১১ আসনের অনেক এলাকা ‘গ্রাম’ রয়ে গেছে। ভালো কোনো সরকারি হাসপাতাল নেই। সরকারি স্কুল নেই। এটি দুঃখজনক। টানেল হওয়ায় আমরা আশার আলো দেখছি। আশা করছি- এবার আমরা সরকারি হাসপাতাল, স্কুল পাবো।

বন্দর-পতেঙ্গা থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এমএ লতিফ। এবার জিতলে নগরীর কোনো এলাকা থেকে টানা ৪ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়বেন তিনি। লতিফ বলেন, জনগণের ভালো-মন্দ নিয়ে সব সময় পাশে ছিলাম। এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি। এবার জয়ী হলে সরকারি হাসপাতাল, স্কুল নির্মাণে উদ্যোগ নেব।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। এবার জিতে বাজিমাত করতে চান তিনি। সুমন বলেন, সবচেয়ে বেশি ভোট আমার ওয়ার্ডে। দুইবার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। রাজনীতি করতে গিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছি। ভোটাররা আস্থা রাখলে এ আসনকে স্মার্ট আসনে পরিণত করবো।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৭-৩০ ও ৩৬-৪১- ১০টি ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম-১১ সংসদীয় আসন গঠিত। ভোটাররা বলছেন, প্রথমদিকে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা কিছুটা কম থাকলেও এখন প্রার্থীরা ‘আদা-জল’ খেয়ে মাঠে নেমেছেন। ভোটারদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। এলাকায় উৎসব তৈরি হয়েছে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতা বাড়তে থাকায় জাগছে শঙ্কাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *