লোহাগাড়ায় আগুনে পুড়লো ৬ বসতঘর, পরষ্পরকে দুষছে ক্ষতিগ্রস্তরা
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আগুনে ৬ পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার সময় বড়হাতিয়া আব্দুল আলিম সিকদার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। জমি-জমার বিরোধ থাকায় অগ্নিকাণ্ডের জন্য ক্ষতিগ্রস্তরা পরষ্পরকে দুষছেন ঘটনার জন্য। ফায়ার সার্ভিস বলছে, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত জানা যায়নি।
ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, ওই এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে মুহাম্মদ ইউনুছ, নজরুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, মৃত মুহাম্মদ ইউনুছের ছেলে জয়নাল আবেদীন ভুট্টু, আলী আহমদের ছেলে মকবুল আহমদ ও মৃত ফরিদ আহমদের স্ত্রী আরফা বেগম।
ক্ষতিগ্রস্থ মকবুল আহমদ বলেন, আমি বাড়িতে একা ছিলাম। ধানক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্য ভোর ৪টার দিকে জমিতে যাই। সেখানে গিয়ে আশপাশের মানুষের চিৎকার শুনে বাড়ির পাশে গিয়ে দেখি আমার ঘরে আগুন জ্বলছে।
‘আমার গোলা ভরা ধান ও বাড়ির আসবাবপত্রসহ মুল্যবান জিনিসপত্র। সবকিছু পুড়ে গেছে। তবুও অন্যান্যরা আমাকে দোষারোপ করছেন। এটি দুর্ঘটনা ছাড়া কিছুই নয়। আমার বাড়ি থেকেই আগুনের সূত্রপাত।’— বলেন কৃষক মকবুল।
ক্ষতিগ্রস্ত মুহাম্মদ ইউনুছের ছেলে সাজ্জাদ বলেন, আমরা সবাই ঘুম। রাত সাড়ে ৪টার সময় বাড়ির চারদিকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে বাড়ি থেকে কোনোমতে এক কাপড়ে বের হয়েছি। মকবুল আহমদের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। আমাদের জানে মেরে ফেলার জন্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি তিনি ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় আমাদের মূল্যবান জিনিসপত্র, কাগজপত্র সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। ঘটনার সময় মকবুল হোসেন বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত আরফা বেগম জানান, আমার স্বামী মারা যাওয়ার কিছুদিন পর আমার ভাসুর মকবুল হোসেন সম্পত্তি দখল করার লোভে আমার ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসতে বাধ্য করে। স্বামীর বাড়িতে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ও থাকার ঘরটি এখন পুড়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্তরা দুই ভাগে বিভক্ত। মকবুল-ইউনুচ পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনাটি আসলে দুর্ঘটনা নাকি একে অপরকে ফাঁসানোর জন্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সাজিয়েছেন। তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বের হবে।
লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। ৬ পরিবারের বসতঘর পুড়ে গেছে। আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি। তারা পরষ্পর দোষারোপ করছেন। তারা যদি প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।