শত কোটি টাকার ব্যবসা খলিফাপট্টিতে, ব্যাংক নেই একটিও
চট্টগ্রাম: শুধু রমজান মৌসুমেই শত কোটি টাকার তৈরি পোশাকের ব্যবসা হয় খলিফাপট্টিতে। চট্টগ্রামের মানুষ দর্জিকে খলিফা নামে ডাকে। তাই এলাকার নাম হয়ে গেছে খলিফাপট্টি। নগরের ঘাটফরহাদবেগে বিশেষায়িত এ ক্ষুদ্রশিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার পৌনে একশ’ বছরেও কোনো ব্যাংকের শাখা স্থাপিত হয়নি।
এর ফলে আড়াইশ ছোট ছোট কারখানার উদ্যোক্তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে বাধাসহ ভোগ করছেন নানা অসুবিধা। প্রতিনিয়ত উদ্বেগে থাকেন শঙ্কায়। শাহিনুর গার্মেন্টসের মালিক সিরাজুল ইসলাম। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে ১৯৬৭ সালে কাজ শিখতে এসেছিলেন। দুই বছর কাজ শিখেছেন। তারপর ব্যবসা শুরু। নিজের কারখানায় কারিগর দিয়ে জামা বানিয়ে শোরুমে বিক্রি করে এখনো দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছেন খলিফাপট্টিতে।
তিনি বলেন, এখানে যখন প্রথম এসেছিলাম সব ছিল ছনের ছাউনি কাঁচা ঘর। তারপর কিছু ঘর হলো বেড়া দেওয়া টিনের চালার। আরও পরে আধাপাকা ঘর, কারখানা। এখন বহুতল ভবন, বিপণি কেন্দ্র অনেক। কারখানা বেড়েছে, শ্রমিক বা কারিগর বেড়েছে। লেনদেন বেড়েছে। রমজানে কয়েকশ’ কোটি টাকা লেনদেন হয় একদিনে। কিন্তু একটি ব্যাংকের শাখা হলো না। এটাই বড় প্রতিবন্ধকতা আমাদের। বলতে পারেন মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়েছে। কিন্তু এতে খরচ বেশি। আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা হলে আমাদের ঋণ পেতে, সঞ্চয় করতে সুবিধা হতো।
খলিফাপট্টিতে পুরুষ কারিগরদের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করেন। তাদের একজন পারুল। ২ মাস ধরে একটি কারখানায় কাজ করছেন। তিনি জানান, আগে গার্মেন্টসে কাজ করে বেতন পেতেন ৬ হাজার। খলিফাপট্টিতে পাচ্ছেন ৯ হাজার।
জনশ্রুতি রয়েছে, ১৯৪৭ সালের পর আইয়ুব আলী নামের নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এক ফেরিওয়ালা নিজের গ্রামের কিছু লোকজন এনে খলিফাপট্টিতে কাপড় তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। এখানকার কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিক নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার। কারিগররা একেকটি কারখানার মালিকের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি করেন। শতাধিক আলাদা শো-রুম থাকলেও বেশিরভাগ কারখানা, শোরুম একসঙ্গেই। সেখানেই তাদের থাকা-খাওয়া চলে।