দেশজুড়ে

শিকলে বেঁধে মাদরাসাছাত্রকে নির্যাতন, শিক্ষক গ্রেপ্তার

কোমরে শিকল বেঁধে তরিকুল ইসলাম (১১) নামে এক মাদরাসাছাত্রকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে গৌরনদী মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি মাদরাসাশিক্ষক জিহাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ।

আহত তরিকুল বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট গ্রামের মৃত আউয়াল হাওলাদারের ছেলে ও গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের লক্ষণকাঠি গ্রামের হাজি আব্দুল হাই-কুলসুম হাফেজিয়া মাদরাসার নাজেরা শাখার ছাত্র।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া জানান, নির্যাতনের বিষয়ে মাদরাসার শিক্ষক জিহাদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসাইন ও পরিচালক দাদন মিয়াকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি জিহাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।

নির্যাতনের শিকার ছাত্র তরিকুল ইসলাম জানায়, শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ক্লাসে পড়ানোর সময় অন্য এক ছাত্রের সঙ্গে কথা বলায় তাকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখেন শিক্ষক (ছোট হুজুর) জিহাদুল ইসলাম। এ সময় তার প্রস্রাবের চাপ শুরু হলে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলা সত্ত্বেও শিক্ষক জিহাদুল তাকে টয়লেটে যেতে দেয়নি। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। এরপর কান ধরে ওঠবস করানো হয়েছে। সবশেষ তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়।

তরিকুল ইসলাম আরও জানায়, তার পায়ের সঙ্গে কোমরে শিকল পরানো হয়। সারা রাত শিকলবন্দি করে রাখার পর রোববার বেলা ১১টার দিকে সুযোগ পেয়ে সে পালিয়ে বাড়িতে আসে।

ভুক্তভোগী ছাত্র তরিকুল ইসলামের ভাই মাসুম হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি মাদরাসার পরিচালক দাদন মিয়া ও বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইনকে জানানো সত্ত্বেও তারা কোনো বিচার না করায় অভিযুক্ত শিক্ষকসহ তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তবে শিশু ছাত্র তরিকুল ইসলামকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করলেও শিকলবন্দি করে রাখার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক জিহাদুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে মাদরাসার পরিচালক দাদন মিয়া ও বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *