শীতকালে বেশি বিয়ে হওয়ার কারণ কি?
শীতের মৌসুম এলেই দুই-চারটা বিয়ের দাওয়াত পান না, এদেশে এমন মানুষ খুব কমই আছেন। এমনকী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও নব বিবাহিত কাপলের ছবি বছরের এই সময়েই বেশি দেখতে পাবেন। তাদের শুভেচ্ছা, শুভকামনা জানানোর ফাঁকে কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন শীতকাল এলেই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। শীতের কিন্তু আরেকটি নামও আছে, এই মৌসুমকে বিয়ের মৌসুমও বলা হয়। একটা মৌসুমের আরেক নাম কেন বিয়ের মৌসুম হবে, নিশ্চয়ই এর নেপথ্যে অনেক কারণ রয়েছে।
বছরের শেষ কিংবা শুরুঃ বছরের শুরুতে মানুষ নিজেকে আয়নায় আরেকবার দেখে। পুরো বছরের বাকি কাজগুলো এসময় দ্রুত শেষ করতে চায়। যেহেতু ডিসেম্বরের দিকেই শীতের শুরু, তাই এসময় মানুষ নিজেকে নতুন করে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য বিয়ের বন্ধনে জড়ায়। আবার জানুয়ারি মাসেও থাকে শীত। এসময় বছরের শুরু। যে কারণে নতুন বছরে মানুষ নিজেকে নতুন সম্পর্কে দেখতে চায়। ফলে বছরের শুরুতেই সিঙ্গেলের খাতা থেকে নিজের নামটা কাটিয়ে নেয়। দু’জন মিলে যে নতুন জীবন, তার শুরুটা নতুন বছরের শুরুতেই করতে চায় বেশিরভাগ মানুষ।
বছর শেষে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি মেলে। বিশেষ করে স্কুলগুলোতে। বেশিরভাগ আত্মীয়-পরিজনের সন্তান স্কুলগামী থাকে। যে কারণে বছরের মাঝামাঝি বা অন্যান্য সময়ে বিয়ের আয়োজন করলে সবাই উপস্থিত হতে পারে না। এসময় যেহেতু ছুটি থাকে তাই সবার উপস্থিতি অনেকটা সহজ হয়ে যায়। আর এ কারণেই ডিসেম্বরে বেশিরভাগ বিয়ের আয়োজন করা হয়।
সাজঃ শীতের সময়ে যত খুশি সাজুন, নষ্ট হওয়ার ভয় নেই। এটি মন ভরে সাজগোজ করারও মৌসুম, যেখানে গরমের সময়ে হালকা সাজলেও একটু পরে ঘেমে সব নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু শীতে ভারী সাজলেও তা সারাদিনে নষ্ট হবে না। কারণ এসময় ঘেমে যাওয়ার ভয় নেই। তাই বিয়ের কনে কিংবা বর তো বটেই, অতিথিরাও এসময় প্রাণ ভরে সাজতে পারেন, পরতে পারেন নিজের পছন্দের সবচেয়ে জমকালো পোশাকটি।
আয়োজনঃ একটি আয়োজনের জন্য দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। অনেকেই সারাবছর ধরে টাকা জমিয়ে আর্থিক প্রস্তুতি নেন। বিয়েতে খরচ করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হয় তা জোগার করতেও খানিকটা সময়ের প্রয়োজন তো হয়ই। বাড়িঘর সাজানো কিংবা গোছানোরও বিষয় আছে। সবকিছু মিলিয়ে বছরের শেষ কিংবা পরবর্তী বছরের একদম শুরুতেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সম্ভব হয় বেশিরভাগের পক্ষে। এটিও শীতে বিয়ে বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ।