রাজনীতি

শুধু ভোটের জন্য ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়নি: মান্না

শুধু ভোটের জন্য ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন।

সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ আন্দোলন শুধু ভোটের জন্য হয়নি। আন্দোলন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার, ন্যায্যতার ভিত্তিতে তার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা দেবার মতো একটা পরিবেশ তৈরি করার জন্য হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ের বিজয় হয়েছে, এখন কি? আমরা তো শুধু স্বৈরাচার সরকার উৎখাত হয়ে যাক সে লড়াই করিনি, আমরা সরকার ও দেশ বদলাবার লড়াই করছি। আমরা সরকার ও প্রশাসন বদলাবার লড়াই করছি। সরকার বদলেছে, এখন পরের কাজটা করতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশকে কল্যাণকর রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, মানবিক রাষ্ট্র, যত সুন্দর রাষ্ট্র হতে পারে, সেটা করতে হবে। যেই রাষ্ট্রে বেঁচে থেকে আরাম পাবো, স্বস্তি পাবো। সেই রকম দেশ গড়ার পথে বাধা কি ছিল? স্বৈরাচার। তারা মানুষকে কথা বলতে দিতো না, ভোটের অধিকার দিতো না, গণতন্ত্র শেষ করে দিয়েছিল। আজকে যদি সেই রাষ্ট্র গঠন করতে চাই তাহলে সে রকম একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা লাগবে। সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা লাগবে। যে নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।

তিনি আরও বলেন, গত দুইটা নির্বাচন যদি দেখেন, সবচেয়ে বেশি ভোট ডাকাতি করেছে পুলিশ। পুরো ভোটটাকে খেয়ে ফেলেছে পুলিশ, জনগণকে কথা বলতে দেয়নি পুলিশ, সেই পুলিশ এখন কোথায়? জনগণের আক্রোশের সামনে দাঁড়িয়ে এখন তারা থানায় বসতে ভয় পায়। থানার বাইরে গেলে তাদের নিজেদের সিকিউরিটি নাই, ভোট এই পুলিশ দিয়ে হবে? যদি কয়েকটা আইজি, ডিআইজি, বড় বড় অফিসার বদল করে দেন তাহলেই কি পুলিশ বদলে যাবে? এ পুলিশ এখনো তলে তলে ঘুষ খায়। এখনো যারা মনে করে মামলা কোর্টে নিচ্ছে না তারা পুলিশের কাছে যায়, টাকা যদি দেয় তাহলে হয়তো মামলা নেবে। সেটা আবার পার্টির কোনো নেতা ধরে তিনি সেটা ব্যবস্থা করে দেন।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা তো আপনাদের সঙ্গে আছি। একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে ভালো একটা নির্বাচন দিন। আমরা সিদ্ধান্ত নেব আমরা কোন পক্ষের মানুষ। সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকার কোন পক্ষের মানুষ। যদি আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি তাহলে কাজ সহজ হবে। আমরা ফ্যাসিবাদের বিপক্ষের মানুষ, গণতন্ত্রের পক্ষের মানুষ। তাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যূনতম দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে নির্বাচন, মানুষের ভোটের অধিকার। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে একটা নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যে পরিবর্তনটা চেয়েছিলাম সেই পরিবর্তনটা ছাত্র-জনতা সাধারণ জনগণ সবাই মিলে রক্ত দিয়ে তুমুল আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদ সরকারকে শুধু পতনই করে নাই একেবারে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এ আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষকে একটি নতুন প্রেক্ষাপট দেওয়ার জন্য।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের উপদেষ্টা ওসমান গনির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *