আন্তর্জাতিক

শুধু রুটি খেয়ে ঈদ কাটাচ্ছেন গাজার মানুষ

যুদ্ধবিধ্বস্ত উত্তর গাজার মানুষ চরম খাবারের সংকটে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাদের কাছে ফল, সবজি আর মাংস একদম ফুরিয়ে আসছে। এর অর্থ হলো, শুধু রুটি খেয়ে বাঁচতে হচ্ছে তাদের।

শুধু তা-ই নয়, বাজারে যেসব খাবার পাওয়া যাচ্ছে, তা চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। যুদ্ধ শুরুর আগে এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল প্রায় এক ডলার। এখন তা বেড়ে প্রায় ৯০ ডলারে পৌঁছেছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৭০ ডলার চাইছেন বিক্রেতারা।

গাজা নগরীতে থাকেন উম মোহাম্মেদ। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণের মুখে বেশ কয়েকবার ঘর ছাড়তে হয়েছে তার পরিবারকে। আশ্রয় নিয়েছেন জাতিসংঘ পরিচালিত বিদ্যালয়ের আশ্রয়শিবিরে।

ছয় সন্তানের এই মা বলেন, ‘আমরা ক্ষুধার্ত, কিন্তু বিশ্ব আমাদের কথা ভুলে গেছে।’এই নারী আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে শুধু ময়দা ও রুটি আছে। কিন্তু রুটির সঙ্গে খাওয়ার মতো কিছুই নেই। তাই শুধু রুটি খেয়ে থাকতে হচ্ছে।’

মে মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে গাজা উপত্যকায় তাজা খাবার সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক দাতব্য কর্মীরা এ কথা জানান।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিভিন্ন পোস্টে গাজাবাসী খাবারের চড়া দামের জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন। তারা বলেছেন, ইসরায়েল ও পশ্চিম তীর থেকে নিয়মিত দামে খাবার কিনে তা গাজায় এনে চড়া দামে বিক্রি করছেন।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় বাজার নজরদারি ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার সুযোগ কিছু ব্যবসায়ী কাজে লাগাচ্ছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। উম মোহাম্মেদ বলেন, ‘এখানে কোনো মাংস নেই। সবজি নেই। যদি কিছু পাওয়াও যায়, তবে তা কিনতে অবিশ্বাস্য দাম দিতে হচ্ছে।’

এদিকে ইসরায়েল বলছে, গাজার বেসামরিক মানুষদের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজে কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কোনো সীমা বেধে দেওয়া হয়নি। বরং জাতিসংঘ খুব ধীরগতিতে সহায়তা সরবরাহ করছে। এমনকি সংস্থাটির কার্যক্রম অপর্যাপ্ত।

গত শুক্রবার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিস ও আল-কারারা এলাকায় উড়োজাহাজ থেকে সহায়তার বাক্স ফেলা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস গত বুধবার সতর্ক করে বলেছেন, গাজার জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য একটা অংশ এখন বিপর্যয়কর ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *