অন্যান্য

সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারী-এলাকাবাসী

জেলার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশেই ময়লার ভাগাড় তৈরি হয়েছে। জেলা শহরের সব ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে মহাসড়কের পাশেই।

দুর্গন্ধে যানবাহনের চালক, যাত্রীসহ পথচারীরা রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। জেলার মস্তফাপুর পার হলেই বরিশালমুখী সড়কের পাশে তিন স্থানে দেখা মেলে এ ময়লার এই ভাগাড়!।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মস্তফাপুর পার হলেই পরিবহনের যাত্রীরা নাকমুখ চেপে রাখেন। ময়লার ভাগাড়ের পাশ দিয়ে যেতেই দুর্গন্ধে বাস ভরে উঠে। ময়লার স্তূপ পেরিয়ে গেলেও দুর্গন্ধ আটকে থাকে বাসের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরেই গন্ধের এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী, বাসের চালকসহ স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে মস্তফাপুর ইউনিয়নের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ব্যস্ততম সড়কের পাশেই। অনেকদিন ধরে ময়লা ফেলার ফলে সড়কের তিনটি স্থান এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

মাদারীপুর পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে ৩৫ টন বর্জ্য বের হয়। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্য ফেলার জন্য পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় ভাগাড় বা ডাম্পিং স্টেশন করা সম্ভব হয়নি। তাই কয়েক বছর ধরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মস্তফাপুর ইউনিয়নের বড়মোহের এলাকায় পৌর মেয়র খালিদ হোসেনের নিজস্ব জমিতে ময়লা ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২৪ ফুট চওড়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বেশ কিছু জায়গা ময়লার ভাগাড়ের দখলে। সাধারণ মানুষকে নাকে-মুখে হাত চেপে, নিশ্বাস বন্ধ করে চলাচল করতে হচ্ছে। দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের বসতবাড়িতে। শুধু মাদারীপুর পৌরসভার ময়লাই নয় রাজৈর ও কালকিনি পৌরসভার ময়লাও ফেলা হয় এই মহাসড়কে।

দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক হিসেবেই পরিচিত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক। এই মহাসড়কের মাদারীপুরের ৪৮ কিলোমিটার অংশে কমপক্ষে তিনটি স্থানে ফেলা হচ্ছে এই ময়লা আবর্জনা।

স্থানীয়রা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এখানে থাকাই দায়। নাক মুখ চেপে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধ হওয়ায় অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছি। পৌর মেয়রের কাছে আমাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিন।

বাসযাত্রী আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ময়লার অংশটুকু পার হতে গেলেই দুর্গন্ধ গাড়ির মধ্যে ঢুকে। ময়লার স্থান পার হলেও দুর্গন্ধ যেতে সময় লাগে। অনেক সময় বাচ্চারা বমি করে ফেলে।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমদ বলেন, মহাসড়কের ময়লার ফেলার কারণে পথচারীদের দুর্গন্ধে বিভিন্ন রকমের রোগ হতে পারে। খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলার ফলে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রভাব পড়ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এর ফলে ওই এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। এসবের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইতোমধ্যেই ময়লা ফেলতে পৌরসভারকে পাঁচ একর জমি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *