সম্পর্ক আরো শক্ত করতে চাই: চট্টগ্রামে রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত
রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিতস্কি বলেছেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রপাত করেছেন। আমরা এ সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে আরও শক্ত করতে চাই। বাংলাদেশে সব বিনিয়োগ ও সম্বৃদ্ধিতে রাশিয়া পাশে থাকবে।’
রবিবার (৯ জুন) চিটাগাং ক্লাবের সিনেমা থিয়েটার-‘সি-ম্যাক্স’ হলে আয়োজিত রাশিয়া দিবস উদযাপন শেষে সিভয়েস২৪ এর সঙ্গে সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশ বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক বাংলাদেশের কৃষি ও জাহাজ শিল্পও উন্নত হচ্ছে। এছাড়া শিল্পোন্নয়নে বাংলাদেশ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এলএনজি নিয়েও বাংলাদেশের সেক্টর বড় হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া মিশ্র বাজারভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। রাশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদের প্রচুর বরাদ্দ রয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেলের রিজার্ভের ক্ষেত্রে রাশিয়া বেশ সম্বৃদ্ধ। আইএমএফ (আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিল) অনুসারে ক্রয় ক্ষমতা ৬ষ্ঠ বৃহত্তম এবং বিশ্বব্যাংক অনুসারে ৫ম বৃহত্তম। নিউক্লিয়ার সায়েন্স, কৃষি, সার উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাশিয়া স্বাবলম্বী। বাংলাদেশের কোনো উদ্যোগে যদি আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, আমরা তা করবো।’
অনুষ্ঠানে রাশিয়ার রাষ্টদূত আলেকজান্ডার মান্টিতস্কি বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত উন্নয়নে রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে আছে। রাশিয়ার আছে সম্বৃদ্ধ জিডিপি। কৃষি থেকে শুরু করে রাসায়নিক ও কনস্ট্রাকশনে আমরা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে পারি। এছাড়া বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতে বিনিয়োগ ও সম্বৃদ্ধিতে রাশিয়া পাশে থাকবে। এক কথায় যেকোনো সহযোগিতা আমরা বাংলাদেশের পাশে আছি।’
বাংলাদেশের সম্প্রীতি উন্নয়নে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করছে। এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করার জন্য আমাদের বাংলাদেশের সূচনা লগ্ন থেকে রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে ছিলো। এখনও আছে। এই ধারাবাহিকতা রক্ষায় রাশিয়ান সরকার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এতে আমাদের পারস্পরিক সম্প্রীতি আরও উন্নত হবে।’
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে রাশিয়ার কনসাল জেনারেল স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়নসহ কারিগরি সহযোগিতা করছে। কথা আছে, প্রথমটির পর আরও একটি নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়া আমাদের পাশে থাকবে। এতো বড় বড় প্রকল্প ছাড়াও আমাদের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও গবেষণায় রাশিয়া পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি করেছে। এজন্য রাশিয়ার এম্বেসেডর আলেকজান্ডার মান্টিতস্কি আজকে (রোববার) রাউজানের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। তিনি আমাদের শিশুদের জ্ঞান বিকাশ প্রত্যক্ষ করে খুবই আনন্দিত হয়েছেন।’
রাশিয়ান ইয়্যুত ডেলিগেশন অব বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি জিয়া উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘২০৩০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের যুব সমাজের জ্ঞান ও সংস্কৃতিকে সম্বৃদ্ধ করতে রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে। এটি আমাদের যুব সমাজকে আরও শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করবে।’
অনুষ্ঠানে রাশিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।