সিএনজির ১০ টাকা ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি : দুপক্ষের গুলিবিনিময়ে আহত ১৪
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ১০ টাকা সিএনজি ভাড়া নিয়ে চালকের সাথে যাত্রীর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই ওয়ার্ডের সশস্ত্র সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ই জুন) দুপুর ২’টার দিকে উপজেলার চরতী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড গাইনার বাড়ি এলাকায় এঘটনা ঘটে।
এঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আহতরা হলেন, চরতী ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে শফি আহমদ (৬০), মৃত কবির আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০), আহমদ ছফার ছেলে মো. সোহেল (৩০), ইউনিয়নে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. তানিম (১৩), মো. আলমগীরের ছেলে জোবায়ের ইসলাম আকিব (২২),তাজ উদ্দিনের ছেলে হুমায়ন কবির (২৯), মৃত জাফর আহমদের ছেলে মো. রুবেল (৩১), মৃত আবদুর জলিলের ছেলে লেয়াকত আলী (৫৬), আবদুল মতলবের ছেলে আবুল হাশিম (৩৬), মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আশেক (২০) এবং আমিলাইষ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত হাসানের ছেলে ইরফান (২৩)।
এসময় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আতিক (২৬) নামে একজনকে দেশীয় ভাঙ্গা বন্দুকসহ আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন জনগণ। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনায় আহত মোহাম্মদ রুবেল বলেন, আমাদের এলাকার আবু ছালেক নামে আমাদের এক দুলাভাই এলাকায় আসেন। তিনি চরতী দুরদুরি থেকে ২০ টাকা ভাড়া দামাদামি করে আসলে গাইনার বাড়ি এলাকায় ভাড়া দিগুণ খুঁজে চালক। এই নিয়ে চালকের সাথে কথা কাটাকাটি হলে ওই সিএনজি চালক চরতী ৮’নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামকে ডেকে এনে অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি এবং মারধর করে। এসময় আমার এলাকায় বৃদ্ধদেরও মারধর করে। পরে সাইফুল মেম্বার সিএনজি চালক আতিককে ব্যাপক কুপিয়ে মারধর করে বন্দুক দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
এবিষয়ে চরতী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং প্যানেল চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, সিএনজি ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সিএনজি চালক জিহান ও তার চাচা হাশিমকে মারধর করে। পরে স্থানীয় শাহ জাহান, রুবেল, রমজান, বোরহান, দেলোয়ার, জাহাঙ্গির, নূর মোহাম্মদ, এবং ছিদ্দিকরা মিলে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এর পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে গেলে সবাইকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এসময় বেশ কয়েকজন আমার এলাকার মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়। আমার একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান থাকায় আমি ব্যস্ত থাকি। কিন্তু ঘটনার খবর শুনে প্রথমে গ্রাম পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠায়। পরে থানা প্রশাসনকে অবহিত করি। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনি যে একজনকে অস্ত্রসহ আটক করেছে। আমি তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পাঠায়। আমি কেন অস্ত্র দিব, সে যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করেছে, আহত এবং ক্ষিপ্ত জনতা তাকে মারধর করেছে।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যবরত মেডিকেল অফিসার ডা. সুব্র দেব বলেন, আতিক নামে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চমেকে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ সহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসা নিয়েছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার পূর্বকোণকে বলেন, সিএনজি ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা অস্ত্রসহ একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এঘটনায় কেউ মামলা করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।