সিডিএর ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে যুবকের মামলা
চারদিন আগে গত ৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভবনে বেদম পিটুনির শিকার হয়েছেন ইমরান হাসান (৩৮) নামের এক যুবক। সিডিএ কর্মচারীদের মারধরে আহত ওই যুবক নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।মামলায় সিডিএর ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাতে মামলাটি করলেও জানাজানি হয় সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাতে।মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন— সিডিএর অথারাইজড-২ এর সেকশন অফিসার নাছির খান (৫২), সাইফুল হক (৫২), অথারাইজড-১ এর সেকশন অফিসার সুবীর বাবু (৪৮), সহকারী অথারাইজড অফিসার-২ মো. গিয়াস (২৪), মো. মহিউদ্দিন (৪৮), ডিসিটিপি সহকারি মো. সোহেল (৩৬), মো. সাগর (৩০), মো. টুটুল (৩৭), সহকারী অথারাইজড অফিসার-১ মো. বেলাল (৩৩) এবং জয়নাল আবেদীন (৩৮)। তবে জয়নাল আবেদীনের পদবি এজাহারে উল্লেখ নেই। একইসাথে অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সিডিএ ভবনে মারধরের ঘটনায় আহত হয়ে পরেরদিন ওই যুবক মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম ওবায়েদুল হক।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদি ইমরান হাসান (৩৮) চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের অথরাইজড রিপ্রেজেন্টিটিভ। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার অন্তর্গত চান্দগাঁও মৌজার আর এস দাগ নম্বর-৬৯৩৬ (অংশ), ৬৯৩৩ (অংশ), বি এস দাগ নম্বর-১৭০৬৭ (অংশ), ১৭০৬৮ (অংশ) জায়গার ওপর অবৈধ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য সিডিএ বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সিডিএ ওই ভবনের কাজ বন্ধ করার জন্য একটি অস্থায়ী নিষেধজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নির্মাণ কাজ বন্ধ না করায় সিডিএ নির্মিত ভবনটি অপসারণ করার জন্য চূড়ান্তভাবে নোটিশ জারি করেন। অভিযুক্ত ভবনের মালিক ও সিডিএর কিছু কর্মকর্তার পরস্পর যোগসাজশে ভবনটি উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বিষয়টি জানতে পেরে তিনি চেয়ারম্যানের পিএসহ ওই শাখার কর্মকর্তাদেরকে মোবাইল ফোনে জানানোসহ সশরীরে অফিসে উপস্থিত হয়ে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আবেদনের বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ৮ নভেম্বর (বুধবার) চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাকে না পেয়ে সচিবের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সচিবের রুম থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ১০-১২ জন তাকে বেদম মারধর করে। পরে তিনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
প্রসঙ্গত, মামলার বাদি ইমরান হাসান (৩৪) নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সোলাইমানের ছেলে।সোলাইমান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সিডিএ কর্মকর্তাদের অভিযোগ— গণপূর্ত সচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই যুবক নিয়মিত সেখানে গিয়ে বিভিন্ন কাজের তদারকি করেন। ঘটনার দিন গত বুধবার (৮ নভেম্বর) একইভাবে সিডিএ ভবনের কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে যান ইমরান। পাশাপাশি সিডিএ চেয়ারম্যানের কক্ষের বাইরে থেকে ছবি তোলেন। চেয়ারম্যান অফিসে অনুপস্থিত কেন, এমন কথাবার্তা বলেন। এতে সিডিএ’র কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কয়েকজন কর্মী ইমরানকে তৃতীয় তলায় নিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেন। পরে প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষে নিয়ে যান। ওই ঘটনার পর যুবকের দাবি— গণপূর্ত সচিবের নির্দেশেই তিনি সিডিএ ভবনে যান। একইসাথে গণপূর্ত সচিবও ওই যুবকের সঙ্গে পরিচয় থাকার কথা গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।