খেলা

সিরিজ স্থগিত করা অস্ট্রেলিয়ার ‘ভণ্ডামি’: তালিবান

তালিবান সরকারের অধীনে নারী ও মেয়েদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবারও দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। তবে অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষপের কড়া সমালোচনা করেছে তালিবান। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ বাতিলের সিদ্ধান্ত আসলে ‘ভণ্ডামি’ ছাড়া কিছু নয়।

আইসিসির এফটিপি অনুযায়ী, আগামী আগস্টে একটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে (সংযুক্ত আরব আমিরাতে) তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল দুই দলের। কিন্তু আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিরিজটি স্থগিতের ঘোষণা দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

আইসিসির পূর্ণসদস্যের তালিকাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র আফগানিস্তানেরই মেয়েদের ক্রিকেটে কোনো দল নেই । দেশটির তালিবান সরকার নারী ও মেয়েদের মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করছে বলে মনে করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তাই নিজেদের সরকারের সঙ্গে পরামর্শের পর সিরিজ স্থগিতের সিদ্ধান্তে আসে তারা।

বিবৃতিতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানায়, ‘আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই কারণে আমরা আমাদের আগের অবস্থান বজায় রেখেছি এবং আফগানিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ স্থগিত করব। বিশ্বজুড়ে নারী ও মেয়েদের ক্রিকেটে অংশগ্রহণে সিএ তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি বজায় রেখেছে এবং এ ব্যাপারে আইসিসির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকবে। ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক ম্যাচগুলো পুনরায় আয়োজন করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা নির্ধারণ করতে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে সিএ। ‘

একই কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০২১ সালে টেস্ট ম্যাচ বাতিল ও ২০২৩ সাল ওয়ানডে সিরিজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগেও খেলেছেন আফগানিস্তানের কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। এ কারণেই অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ বাতিলকে ‘ভণ্ডামি’ আখ্যা দিল তালিবান।

কাতারের রাজধানী দোহায় ‘আল জাজিরা’কে তালিবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিজেদের পক্ষে থাকলে আমাদের বিপক্ষে খেলতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যখন তাদের পক্ষে থাকে না, তখন তাদের ভণ্ডামি প্রকাশ পায়। যখন তারা আমাদের খেলোয়াড়দের তাদের লিগে খেলতে বলে, তখন হঠাৎ করে তারা নারী অধিকারের কথা ভুলে যায়। কিন্তু আমাদের উপেক্ষা করার সময় তারা নারীদের কথা বলে। ‘

শাহীনের দাবি, অস্ট্রেলিয়া এবং সিএ ‘ক্রিকেটের মাধ্যমে তাদের নিজেদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ চাপিয়ে দিতে চায়। ‘

অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ‘এক্স’-এ বেন গার্ডনার নামের এক ক্রীড়ালেখক লিখেছেন, ‘মজার ব্যাপার হচ্ছে, যখনই অস্ট্রেলিয়ার দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার সময় আসে তখনই আফগানিস্তানের নারী অধিকারের প্রসঙ্গ সামনে আসে। কিন্তু বিশ্বকাপ এলে যেন পরিস্থিতির উন্নতি হয়ে যায়। ‘

২০২১ সালের আগস্টে তালিবান ক্ষমতা দখল করার পর থেকে আফগানিস্তানে নারীদের ক্রিকেট খেলা কার্যত নিষিদ্ধ। নারী ক্রিকেটারদের অনেকেই দেশটি ছেড়ে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। যদিও নারীদের ক্রীড়াক্ষেত্রে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই, এমন দাবি করেছে তালিবান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *