সেই গোল্ডেন মনিরের খালাস নিয়ে যা বললেন আদালত
মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে অস্ত্র মামলায় খালাস দিয়েছেন আদালত। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) করা একটি অস্ত্র মামলায় সম্প্রতি এ রায় দিয়েছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান।
মনিরের আইনজীবী দবির উদ্দিন বলেন, রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, মনিরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা করা হয়। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, অস্ত্র মামলায় মনির হোসেনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর পর্যালোচনা সাপেক্ষে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
আদালতের রায়ের তথ্য অনুযায়ী, র্যাব মামলায় বলেছিল, ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর মনির হোসেনের বাড্ডার বাসায় র্যাব অভিযান চালিয়েছিল সকাল ৬টায়। এ সময় বাসার তৃতীয় তলায় শয়নকক্ষের তোশকের নিচ থেকে ম্যাগাজিনভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল না। অস্ত্র আইনে মামলার পর মনিরকে আদালতের অনুমতি নিয়ে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৬ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থিত করা হয়।
আদালত বলেছেন, পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মনির ও তার স্ত্রীর নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র ছিল। তাই নিজের ও স্ত্রীর নামে দুটি বৈধ অস্ত্র থাকা অবস্থায় আরেকটি অবৈধ অস্ত্র ঘরে রাখার ঘটনা স্বাভাবিক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়। ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় মনির হোসেনের রাজধানীর বাড্ডার বাসার শয়নকক্ষে খাটের তোশকের নিচ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছে, পাবলিক সাক্ষী এমাদ ও মোবারকদের উপস্থিতিতে মনিরের বাসার শয়নকক্ষ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের অভিযোগ সমর্থন করে না। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের তথ্য বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়, মনিরের বাসায় সকাল সাড়ে ৬টায় নয়; অভিযান চালানো হয় রাত সাড়ে ১০টায়। বিশেষ উদ্দেশ্যে মনিরের বাসায় অভিযান চালানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি সাজানো। অন্য সাক্ষীরা মনিরের শয়নকক্ষ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। মনিরের বাসা থেকে উদ্ধার অস্ত্রের ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে কোনো তথ্য নথিতে উল্লেখ নেই। আবার মামলা করতে দেরি হয় ১৯ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। এত বিলম্বের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক নয়।