সেই ‘দাপুটে’ ড্রাইভার আশ্রাফকে শাস্তিমূলক বদলি
ডাকগাড়িতে করে বালু পরিবহন, অবৈধভাবে সরকারি বাসা দখল, কর্মচারিদের হুমকি-ধমকি প্রদান করাসহ বহু ‘অপকর্মের’ হোতা আশ্রাফুল ইসলাম ওরফে ড্রাইভার আশ্রাফকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। ডাক বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিস থেকে তাকে সিলেট প্রধান ডাকঘরে বদলি করা হয়। পোস্টমাস্টার জেনারেল (পিএমজি) পূর্বাঞ্চল দপ্তরের অতিরিক্ত পোস্টামাস্টার জেনারেল মোহাম্মদ আবদুল্লাহ রবিবার তাকে বদলির আদেশ দেন। আশ্রাফকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হয়ে আগামী ৯ মের মধ্যে বদলিকৃত পদে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে রবিবার বদলি আদেশ পেয়েই সোমবার সকালে তিনি চলে যান মন্ত্রণালয়ে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির নেইম প্লেটের সামনে ছবি তুলে তা নিজের আইডি থেকে ফেসবুকে পোস্ট দেন। আর এতে লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ঢাকা এর দপ্তরে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে, শুভ সকাল।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আদেশ হাতে পাওয়ার পরদিনই মন্ত্রণালয়ে গিয়ে প্রতিমন্ত্রীর নেমপ্লেটের সামনে নিজের ছবি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কী বুঝাতে চান একজন ড্রাইভার। তাছাড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে একজন ড্রাইভারের ব্যক্তিগত প্রয়োজনই বা কী। পিএমজির আদেশকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তিনি কী বদলি ঠেকাতে গেছন কিনা এমন প্রশ্ন ডাকবিভাগ সংশ্লিষ্ট অনেকের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আশ্রাফের বাড়ি কক্সবাজার জেলায় হলেও সিলেটের হবিগঞ্জের বাসিন্দা হিসেবে মিথ্যে তথ্য দিয়ে ডাক বিভাগে চাকরি নেন। সেখান থেকে তিনি পরে বদলি হয়ে চট্টগ্রামে চলে আসেন। ডাক বিভাগ পূর্বাঞ্চলের অধীন চট্টগ্রাম ডিভিশন অফিসে যোগ দেন। পোস্টম্যান ও ডাক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা পরিচয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য করেন। ডাক পরিবহনের গাড়িতে করে বালু পরিবহনের কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান আছে।
একইভাবে সাইফুল ইসলাম চৌধুরী নামে কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা, মানহানিকর স্ট্যাটাস দিয়ে হন আইসিটি মামলার আসামি। ওই ঘটনায়ও তিনি একবার বরখাস্ত হন। মামলাটির বিচার চলমান রয়েছে। আগ্রাবাদ পিটিঅ্যান্ডটি কলোনিতে একটি বাসা জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিটিসিএল ইমারত ও বৈদ্যুতিক বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী সমিত চাকমা ডবলমুরিং থানায় জিডি করেন। মাহমুদ হোসেন নামে এক নৌ প্রকৌশলী তার বাবাকে হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগে পুলিশ কমিশনার বরাবরে লিখিত অভিযোগও দেন।