স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্যারায় নৌকা-লাঙ্গলের প্রার্থী
শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচনের যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে, তাতে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে অন্তত ১২ আসনে ‘স্বতন্ত্র’ প্যারায় আছেন নৌকা-লাঙ্গলের প্রার্থী। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব আসনে সমানে পাল্লা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাতে জমে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। নির্বাচনে অন্য ৪টি আসনে অত্যন্ত নিরঙ্কুশভাবে এগিয়ে আছেন নৌকার প্রার্থী।
চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে দ্বিমুখী লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল (নৌকা) এর সাথে সেয়ানে সেয়ানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন (ঈগল)। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৭ জানুয়ারি এ আসনে মাহবুব উর রহমান রুহেলের সাথে গিয়াস উদ্দিনের লড়াই দেখতে উন্মুখ হয়ে আছেন ভোটারেরা।
একই অবস্থা চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনেও। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি’র (নৌকা) সাথে ত্রিমুখী লড়াই হবে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়বের (তরমুজ) মধ্যে। দু’জনেই মাঠে টক্কর দিয়ে গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে সনি’র ঘুম হারাম করে দিচ্ছেন তৈয়ব। দ্বীপাঞ্চল চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনেও নৌকার প্রার্থীর সাথে দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর। তাতে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা (নৌকা) ও স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী (ঈগল)। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম আল মামুন (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মো. ইমরানের (ঈগল) মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (লাঙ্গল) এর সাথে দ্বিমুখী লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরীর (কেটলি)। চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনেও দ্বিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। তবে এ আসনে নৌকার প্রার্থী নেই। আসনটি জাতীয়পার্টির প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠকে (লাঙ্গল) ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এ আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীকে ছাপিয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে নাম শোনা যাচ্ছে দু’জনের। এরা হলেন, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম (কেটলি) ও সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি)। ৭ জানুয়ারি এ দুইজনের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী, পাহাড়তলী, হালিশহর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু’র (নৌকা) সাথে দ্বিমুখী লড়াই হবে সাবেক সিটি মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ মোহাম্মদ মনজুর আলমের (ফুলকপি)। বর্তমানে মাঠে এ দুই প্রার্থী সমানে প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ লতিফের (নৌকা) সাথে দ্বিমুখী লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনের (কেটলি)। একই অবস্থা চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনেও। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী’র (নৌকা) সাথে দ্বিমুখী লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর (ঈগল)। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলামী চৌধুরীর (নৌকা) সাথে দ্বিমুখী লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জব্বার চৌধুরীর (ট্রাক)। চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী’র (নৌকা) সাথে দ্বিমুখী লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মোতালেবের (ঈগল)। তবে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে (নৌকা) প্রতিনিয়ত প্যারা দিচ্ছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান (ঈগল) ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন (ট্রাক)। এ আসনে এই তিনজনের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে।