চট্টগ্রাম

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইনোভেশনের বিকল্প নেই: বিভাগীয় কমিশনার

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামী ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইনোভেশনের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম।

রবিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানের শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘ইনোভেশন শোকেসিং’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, সরকার ইনোভেশনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। এ ইনোভেশন শোকেসিং এর উদ্দেশ্য হল আমরা স্মার্ট এবং আধুনিক হব। কোন নাগরিক সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে যাতে প্রতিবন্ধকতার কবলে না পরে সেজন্য নতুন নতুন ইনোভেটিভ উপায় বের করার জন্য এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বিভাগীয় পর্যায়ের ‘ইনোভেশন শোকেসিং’-এর আজ ছিল সমাপনী দিবস। অনুষ্ঠানে ৭৯টি উদ্ভাবনী উদ্যোগের মধ্যে বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর নিরপেক্ষ বিচারে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্ভাবনী উদ্যোগ পটিয়ার ‘হাইদগাঁও স্মার্ট ভিলেজ’ প্রথম ও শ্রেষ্ঠ হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের হাত থেকে উদ্ভাবনী উদ্যোগের প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

উদ্ভাবনী উদ্যোগে ‘নদী ও খাল-বিলের জন্য কচুরিপানা কাজে লাগিয়ে জৈবসার উৎপাদন করে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’র জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং ‘এগ্রিকালচার রোবট উইথ এনভায়রনমেন্ট মনিটরিং’র জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি) চট্টগ্রাম যুগ্মভাবে দ্বিতীয়, ‘নকল ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ও রেজিস্ট্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’র জন্য রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়-তৃতীয় এবং ‘ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো ট্যুরিজম পার্ক’র জন্য খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়-চতুর্থ হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক ও উন্নয়ন) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার গাজালা পারভীন রুহির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘ইনোভেশন শোকেসিং’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী এস.এম খসরুল আলম কুদ্দুসী।

এদিকে বিভাগীয় পর্যায়ের ‘ইনোভেশন শোকেসিং’-২০২৪ সমাপনী দিন আজ সকাল ১১টায় একই ভেন্যুতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ও উদ্ভাবন: ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার গাজালা পারভীন রুহির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে মূল সেমিনার পেপার উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী এস.এম খসরুল আলম কুদ্দুসী।

আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বিকর ইকবাল, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন ও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম চাপ্টারের চেয়ারম্যান স্থপতি আশিক ইমরান। ইনোভেশন শোকেসিং-এ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও সিটি কর্পোরেশনসহ চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলা, উপজেলা, সরকারি ও বেসরকারিসহ মোট ১৯টি প্রতিষ্ঠানের ৭৯টি আইডিয়া উপস্থাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার এডিসি, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তা, উদ্ভাবন উদ্ভাবকগণ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিরা বলেন, ইনোভেশনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের ফলে সেবা সহজীকরণে অনেক কিছু উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে, এর সুফল পাচ্ছে দেশের সাধারণ জনগণ। কৃষকের জানালা, জমির ই-নামজারি, জমির খাজনা প্রদান, অনলাইন জিডি, ই-পাসর্পোট, ই-টিকেটিং, অনলাইন জিডি, স্থায়ী বাসিন্দা সনদ অনলাইন ভেরিফিকেশন, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও হট লাইন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং সিস্টেম ও ই-লার্নি সেন্টার স্থাপনসহ অসংখ্য মাধ্যমে দেশের জনগণ কম সময়ে, কম টাকায়, ঘরে বসে সেবা নিতে পারছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *