হালদায় দূষণে মরছে মা মাছ
‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ও দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে দূষণের হাত থেকে কোন মতে রক্ষা করা যাচ্ছে না। কারখানার দূষিত কালো পানি হাটহাজারীর শিকারপুর খাল, কুয়াইশ, কাটাখালী, খন্দকিয়া ও কৃষ্ণ খাল হয়ে সরাসরি হালদায় পড়ে। এতে নদী ও খালের সংযুক্তস্থলে পানি কালচে রং ধারণ করেছে।
বৃষ্টির জন্য কালো পানিগুলো কয়েকদিন দেখা না গেলেও বৃহস্পতিবার থেকে এসব কালো পানিগুলো পড়তে দেখা গেছে। পাশাপাশি দূষণের কারণে হালদায় মাছের যে প্রাকৃতিক পরিবেশ তা অনেকাংশে নষ্ট হচ্ছে। এতে গত কয় সপ্তাহে মারা গেছে ডলফিনসহ মা মাছ। এর আগে গত এক সপ্তাহে ৬টির অধিক মাছ মারা গেলে মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরপরেও বন্ধ হচ্ছে না হালদাতে পড়া দূষিত পানি।
হালদা বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, নদীতে পড়া বিষাক্ত বর্জ্য মা-মাছসহ জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য প্রতিকূল। দূষণের ফলে নদীর কয়েকটি অংশে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়; বেড়ে যায় কার্বন-ডাইঅক্সাইড, আর ওই পরিস্থিতি মা-মাছসহ জলজ প্রাণির বেঁচে থাকার বেশ দুষ্কর। পাশাপাশি দূষণের কারণে হালদায় মাছের যে প্রাকৃতিক পরিবেশ তা অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়।
হাটহাজারীর ইউএনও এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, দূষিত কালো পানি নগরের চান্দগাঁও, কুলগাঁও, অক্সিজেন এলাকার অবস্থিত কারখানা থেকে হাটহাজারীর শাখা খালগুলো হয়ে হালদা নদীতে গিয়ে পড়ছে। মাছ মারা যাওয়ার ব্যাপারে আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।
শিকারপুর ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান লোকমান হাকিম জানান, হালদায় দূষিত পানি বেশ কয়েকদিন দেখা যায়নি বৃষ্টির কারণে। বিভিন্ন এলাকার কারখানা থেকে এসব পানি কুয়াইশ খাল হয়ে হালদা নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে করে দূষিত হচ্ছে আমাদের এলাকাসহ হালদা নদী।
উল্লেখ্য, গতকাল কয়েকদিনে হালদায় মৃত চারটি মা মাছ ও একটি ডলফিন উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করার কথা। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরও পাঁচ সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করেছে।