চট্টগ্রাম

হালদায় দ্বিতীয় দফায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে দ্বিতীয় দফায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। সোমবার (২৭ মে) বিকেল থেকে ডিম সংগ্রহকারীদের জালে নমুনা ডিম উঠতে শুরু করে। তবে পরিমাণ ছিল অনেক কম। টানা বর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড়ের জলোচ্ছ্বাস এবং পাহাড়ি ঢল সৃষ্টি হওয়ায় জোঁ ছাড়াই নমুনা ডিম ছেড়েছে বলে দাবি হালদা বিশেষজ্ঞদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা ও বাঁশের ভেলা নোঙর করে জাল ফেলে বসে আছেন ডিম আহরণকারীরা। কয়েকঘণ্টা পর পর জাল তুললে ১০০ গ্রাম বা তার চেয়ে কম-বেশি ডিম উঠছে জালে।

ডিম সংহগ্রহকারীরা জানান, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পানি বেড়ে যায়। তবে জোয়ার আসার পর নদীতে স্রোত সৃষ্টি হলে নমুনা ডিম ছাড়তে শুরু করে মা মাছ। এর আগেই থেকে হালদা নদীর রাউজান ও হাটহাজারী অংশের ৫ শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী নৌ-নোঙর, জালসহ ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন।

স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, নমুনা ডিম ছাড়লেও পরিমাণে অনেক কম। আমরা নদীতে আছি, রাতে পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা থাকায় নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম আহরণকারীরা অপেক্ষায় আছেন।

রাউজান উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোমবার বিকেল থেকে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নমুনা ডিম পাওয়া যাচ্ছে। তবে ডিমের পরিমাণ নৌকা প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ছিল। রাতে ভাটার সময় পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন আগে পূূর্ণিমার জোঁ শেষ হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ও টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল সৃষ্টি হয়ে অনুকূল পরিবেশ হওয়ায় মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। তবে ডিমের পরিমাণ খুবই কম। আগামী জুন মাসের ৩-৮ অমাবস্যা, ২০-২৪ তারিখ পূর্ণিমার জোঁ আছে। জুন মাসের জোঁগুলোতে পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ। অমাবস্যার জো ৩-৮, পূর্ণিমার ২০-২৪। প্রসঙ্গত, গত ৭ মে অমাবস্যার জোঁতে নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। সেসময় ডিমের পরিমাণ ছিল বেশি। রাউজান ও হাটহাজারী অংশে তিন শতাধিক নৌকা নিয়ে ১৬০ বালতি অর্থাৎ ১৬০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করেছিলেন ৬ শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী। ডিমগুলো হ্যাচারিতে প্রস্ফুটিত করে প্রায় ৪১ কেজি রেণু উৎপাদন করা হয়। চাহিদার তুলনায় রেণুর পরিমাণ কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে অর্থাৎ প্রতিকেজি রেণু বিক্রি হয় দেড় লাখ টাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *