১৩ বছরে শিক্ষাবৃত্তি পেল ৩০ হাজার প্রবাসীর সন্তান
১৩ বছরে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে রেমিট্যান্স যোদ্ধার প্রায় ত্রিশ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী ৫৭ কোটি টাকা শিক্ষা বৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে চলতি আগস্টে নতুৃন করে আরো শিক্ষা বৃত্তির টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। শিক্ষা ক্যাটাগরিতে এ বৃত্তি দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। এবার চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা শিক্ষা বৃত্তি পেয়েছে ৩৩০ শিক্ষার্থী।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী সন্তানদের মধ্যে ২০২০ সালের আগে ৪ ক্যাটাগরি এইচএসসি, এসএসসি, জেএসসি ও পিএসসি কিংবা সমমান পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ এবং মানবিক ও ব্যবসা বিভাগে জিপিএ-৪.৭৫ পেয়ে যারা আবেদন করেছে, তারাই এ বৃত্তির টাকা পেয়েছে। তবে মৃত প্রবাসী কর্মীর সন্তান গ্রেড ৪ পেলেই তারা বৃত্তির আওতায় এসেছে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনাকালীন সময় থেকে সরকার পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ করে দিলে পরবর্তীতে দুই ক্যাটাগরি এসএসসি ও এইচএসসিতে শিক্ষা বৃত্তির টাকা দিচ্ছে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ওয়েলফেয়ার সেন্টার, চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় যারা আবেদন করেছিল তাদের মধ্যে থেকে ১৪২ শিক্ষার্থীকে (জনপ্রতি ৩৪ হাজার টাকা) ৪৮ লাখ ২৮ হাজার টাকা চেক বিতরণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান ক্যাটাগরিতে ১৮৮ শিক্ষার্থীকে (জনপ্রতি ২৭ হাজার ৫০০ টাকা) ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ করা হয়েছে। চলতি আগস্টে নগরীর জিইসি ওআর নিজাম রোড আবাসিক এলাকার ৯ নং রোডের ১০৩ নং বাড়ির ওয়েলফেয়ার সেন্টার, চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে এ টাকা বিতরণ করা হয়।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের জন্য সরকার ‘প্রবাসী কল্যাণ শিক্ষা বৃত্তি’ চালু করে। ২০১২ সাল থেকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে এ বৃত্তি প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে ২০১২ সালে ৫১ শিক্ষার্থী ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি পায়। পরবর্তী ২০১৩ সালে ১৬৫ শিক্ষার্থী ২৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ২০১৪ সালে ৩১৭ শিক্ষার্থী ৫২ লাখ ২৩ হাজার টাকা, ২০১৫ সালে ৮৪৫ শিক্ষার্থী এক কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০০ টাকা, ২০১৬ সালে ১৮৮০ শিক্ষার্থী দুই কোটি ৮০ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ টাকা, ২০১৭ সালে ১১০৭ শিক্ষার্থী এক কোটি ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ টাকা, ২০১৮ সালে ১৭৭৭ শিক্ষার্থী দুই কোটি ৪২ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ টাকা, ২০১৯ সালে ২৬১৪ শিক্ষার্থী তিন কোটি ৫২ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা, ২০২০ সালে ৬৮১৯ শিক্ষার্থী ১১ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টাকা, ২০২১ সালে ২০৩১ শিক্ষার্থী তিন কোটি ৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, ২০২২ সালে ৬১৩৮ শিক্ষার্থী ১২ কোটি ৫১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, ২০২৩ সালে ২৯৪৮ শিক্ষার্থী ৮ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা এবং ২০২৪ সালে (জুন) ২৯৬৮ শিক্ষার্থী ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম থেকে গত ১৩ বছরে কমপক্ষে তিন হাজার পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষাবৃত্তি লাভ করে। এর মধ্যে ২০১২ সালে ১০ জন, ২০১৩ সালে ২০ জন, ২০১৪ সালে ২৭ জন, ২০১৫ সালে ৬০ জন, ২০১৬ সালে ২০৬ জন, ২০১৭ সালে ১৩৭ জন, ২০১৮ সালে ১৬৮ জন, ২০১৯ সালে ৫০১ জন এবং ২০২০ সালে ৭৪৯ জন, ২০২১ সালে ১০৭ জন এবং ২০২২ সালে ৬২১ জন এবং ২০২৪ সালে আগস্ট পর্যন্ত ৩৩০ জন শিক্ষার্থী এ বৃত্তির টাকা পায়। এ ক্ষেত্রে পিইসি পাস মেধাবী শিক্ষার্থীরা ১৪ হাজার টাকা করে তিন বছর, জেএসসি পাস মেধাবী শিক্ষার্থী ২০ হাজার ৫০০ টাকা করে দুই বছর শিক্ষা বৃত্তির টাকা পেয়েছিল। বর্তমানে শুধুমাত্র এসএসসি পাস মেধাবী শিক্ষার্থী ২৭ হাজার ৫০০ টাকা করে দুই বছর এবং এইচএসসি পাস মেধাবী শিক্ষার্থী ৩৪ হাজার টাকা করে ৪ থেকে ৫ বছর ধরে এ বৃত্তির টাকা পাচ্ছে। শিক্ষার্থীর আবেদনের পর চেকের মাধ্যমে তাকে এ টাকা প্রদান করা হয়।